প্রধান মেনু

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে,ঝিনাইদহে গভীর রাতে বাড়ি তালাবদ্ধ করে প্রাচিল ভেঙে ফার্মের গরু চুরি

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ঃ ঝিনাইদহের পৌর এলাকার আবুল হোসেন সড়ক ব্যাপারীপাড়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গভীর রাতে বাড়ির প্রধান গেটসহ ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ করে গরুর ফামের্র প্রাচিল ভেঙে কয়েক লক্ষাধিক টাকার গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ রোজ শনিবার রাত দুইটার দিকে সিরাজুল হক ও স্ত্রী ফরিদা হকের বাড়ি ও গরুর ফার্মে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশি আব্দুল হক মধ্যরাতে গরুর ফার্মের ওয়াল ভাঙ্গার শব্দ শুনে ফরিদা হককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার গরুর ফার্ম ভাঙচুর ও চুরি ঘটনা জানালে, ফরিদা হকসহ তার স্বামী-সন্তান নিয়ে বাসা থেকে বের হতে গেলে দেখতে পায় বাসার মেইন গেটসহ ঘরের বাহির হতে তালা লাগানো।

বিষয়টি ফরিদা হক ও তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে সদর থানা পুলিশকে ঘটনা অবহিত করা হলে খবর পেয়ে পুলিশের এস.আই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে তাদেরকে উদ্ধার করে । সিরাজুল হক ও তার স্ত্রী ফরিদা হক জানান,রাতের অন্ধকারে তালাবদ্ধ করে গরুর ফার্মের প্রাচির ভেঙে গোয়াল ঘর থেকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওয়াহিদ সাদিক লুইস ও একাধিক মামলার আসামী অপুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের বাসভবন সংলগ্ন গরুর গোয়ালের ওয়াল ভেঙে গোয়াল থেকে গরু নেওয়া শুরু করে। এমন সময় ঘর ভাঙার শব্দ শুনে স্থানীয় দুইজন লোক এগিয়ে আসলে তাদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় । পুলিশের সহায়তায়, সিরাজুল হক তার স্ত্রী ফরিদা এবং পুত্র সাব্বির হোসেন ঘর থেকে বের হয়ে তাদের গোয়াল ঘর ও ফার্মের প্রাচিল ভাঙা দেখতে পান এবং গোয়াল ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে । যাবার সময় প্রতিহিংসা মূলকভাবে বায়ো গ্যাস প্লান্টটি ভেঙে রেখে যায়।

এসময় প্রতিবেশিদের সাথে নিয়ে এলাকাতে চোরদলদের খোজা-খুজি করতে থাকলে একপর্যায়ে প্রতিবেশিদের তাড়া খেয়ে গরু চোরদল ৩টি গরু ফেলে পালিয়ে যায় এবং ২টি ফ্রিজিয়ান গরু নিয়ে যায়। যাহার আনুমানিক মূল্য দুই লক্ষাধিক টাকা।এ বিষয়ে গত ১৪/৯/২০১৮ ইং তারিখে ঝিনাইদহ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে সদর থানা পুলিশের এস.আই মোঃ বখতিয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্তে আসে । ফরিদা হক বলেন, হাট ইজারাদার ওয়াহিদ সাদিক অরফে লুইস খুবই প্রভাবশালী।সে ইতিপূর্বে তার নিকট প্রতিবেশী ডাবলুর বসত বাড়ির জায়গাসহ প্রতিবেশী আলফাজের জমিও দখল করে নেয় জোর পূর্বক।সিটি কলেজের শিক্ষক দম্পতি আবুল হোসেন সড়ক, ব্যাপারীপাড়ায় বাড়ী করতে গেলে বিভিন্ন সময় চাঁদার দাবিতে তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তাদের বাড়িতে কয়েকবার সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালায় ।

সমপ্রতি কাজী হাফিজ, লুইসের নিকট থেকে জমি ক্রয় করেও জমি বুঝিয়া পাচ্ছে না,বরং হাফিজ জমির হিস্যা নিতে গেলে তাকে ও তার স্ত্রীকে সন্ত্রাসী লুইস গ্রুপ হুমকি-ধামকি,ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ মারতে তাড়া করে । ফরিদা হক আরো জানান ,লুইচ গুরুপ এলাকায় বহুল আলোচিত, এলাকাবাসি সবাই তার কাছে জিম্মি । বর্তমানে লুইস হাটের একজন ইজারাদার,এরআগে ছিল সুইট হোটেলের কর্মচারী ।পরবর্তীতে সুইট হোটেল মালিকের ইজারার হাটের কর্মচারীর দায়িত ¡নেয় ।তারপর সুইট হোটেল মালিকের টাকা আত্মসাৎ করে নিজেই গরু ছাগলের হাট ইজারা নেয় ।লুইচ এত অল্প সময়ে অঢেল টাকার মালিক বনে যাওয়ায় এলাকায় চাউর আছে অবৈধ্য ভাবে মাদক ব্যবসা,নারী দিয়ে অনৈতিক ব্যবসা করে কালো টাকার পাহাড় গড়েছে এই লুইচ।তিনি আবাবিক এলাকায় ২টি মেস পরিচালনা করে আসছে।মেসের মধ্যে নারি দিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে ।অনৈতিক কাজে এলাকার লোক প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন নেতাদের কথা বলে হুমকি দেওয়া হয়।

বিভিন্ন সময় ম্যাচে থাকা লুইচের লোকজন এলাকার মেয়েদের নানা ভাবে উৎপাত করে থাকে।তাদের অন্যায়-অপরাধের কেউ প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী অপুকে দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।কথায় কথায় থানা পুলিশ তাদের নিজেদের বলে দাবী করে ,একারণে এলাকাবাসি থানায় অভিযোগ করতে ভয় পায়।ফরিদা বলেন গত ১৪ আগস্ট আমার একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে মেসের মধ্যে রান্না করে খায় লুইচ গুরুপ । প্রতিবাদ করলে লুইচ গুরুপ ও তার মেসের ছেলেরা হুমকি- ধামকি,ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ আক্রমনাত্মক আচরন করে । ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের এস আই আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার রাতে খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে ফরিদা হকের বসতবাড়ির মেইন গেটে এবং বাড়ির দরজায় তালা মারা অবস্থায় দেখা যায়। পরে এলাকাবাসির উপস্থিতিতে তাদের তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয়।

এস.আই আনোয়ার,ফরিদা হক এর নিকট ঘটনা সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতিবেশি ওয়াহেদ সাদিক লুইচদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে তারাই আমাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিসাধন ও হয়রানি করে আসছে।তারাই এঘটনা ঘটিয়েছে এবং অনেকে স্বাক্ষি আছে।এস.আই আনোয়ার হোসেন প্রতিবেশি ওয়াহেদ সাদিক এর উপস্থিতিতে উভয়দেরকে পরের দিন থানায় এসে থানার অফিসার ইনর্চাজ স্যারকে ঘটনা অবহিত করতে বলেন।এস,আই আরো বলেন,পরবর্তীতে এ ঘটনা সম্পর্কে আমার আর কিছু জানা নায়। এ বিষয়ে ফরিদা হক বাদী হয়ে ঝিনাইদহ আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে ফরিদা হক জানান।