পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পাইকগাছায় চিংড়ি ঘেরে বাঁধ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ॥ পাইকগাছায় বিরোধপূর্ণ চিংড়ি ঘেরে বাঁধ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। ঘের মালিকদের পক্ষ থেকে উত্তর আমিরপুরের মৃত শাহজাহান আলী সানার মেয়ে আসমা বেগম প্রতিপক্ষ ডিড মালিকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। এদিকে, দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আকতারুজ্জামান বাবু।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর আমিরপুর গ্রামের মৃত শাহজাহান আলী সানার ছেলে ইমরান হোসেন ও সরল গ্রামের শৈলেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে সঞ্জীব রায় গংরা গড়ইখালী ও লস্কর দু’ইউপি সীমান্তে নূরপুর-আমিরপুর মৌজার ওয়াপদার ভিতরে নিজস্ব ও লীজ ডিড মূলে ৯০ বিঘা ও বাইরে ১১০ বিঘা জমিতে চিংড়ি ঘের করে আসছে। যার মেয়াদ এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু এ চিংড়ি ঘেরের মধ্যে ২০১৮ সালে ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম কেরু ওয়াপদার বাইরের অংশ থেকে জাহাঙ্গীর বকুল গংদের কাছ থেকে ৩.৮৪ একর সম্পত্তি ডিড করে নিলে তারা এওয়াজ মূলে সাড়ে ৭ বিঘা সম্পত্তি পৃথক করে চিংড়ি চাষ করে।
২০১৮ সালের নালিশী সম্পত্তির হারীর টাকা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উকিল নোটিশ চালাচালি হয়। চলতি বছরের শুরুতেই উপজেলা আ’লীগনেতা বিভূতি ভূষণ সানার মধ্যস্থতায় বকেয়া ৭৬ হাজার হারীর টাকা আব্দুস সালাম কেরু গংরা বুঝে নেয় বলে জানা গেছে। মৌসুমের শুরুতেই ঘেরের দক্ষিণ অংশের জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি নিস্পত্তি করার চেষ্টা করেন আওয়ামীলীগনেতা বিভূতি ভূষণ সানা। তিনি সরেজমিন গিয়ে শালিসী বৈঠক করে উভয়পক্ষকে শান্তিপূর্ণভাবে ঘের করার জন্য সিদ্ধান্ত দেন।
এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বকুল গংরা ইমরান গংদের ভোগ দখলীয় ঘেরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে জোরপূর্বক বাঁধ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন সঞ্জীব রায়। এ ঘটনায় শাহজাহান সানার মেয়ে আসমা বেগম বাদী হয়ে ইউপি সদস্য সহ প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। মধ্যস্থতাকারী বিভূতি ভূষন সানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, উভয়পক্ষের সিদ্ধান্ত মতে সঞ্জীবের ঘেরের এক পাশ থেকে জাহাঙ্গীর-বকুল গংরা কাগজ মূলে তাদের সম্পত্তি নিজেদের খরচে বাঁধ দিবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে গড়ইখালী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘের মালিক ইমরান-সঞ্জিব রায় গংরা ঘেরের জমির মালিকদের হারীর টাকা না দিয়ে ঘের করে আসছিল। দীর্ঘদিন পর হলেও ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা তাদের সম্পত্তির দখল বুঝে নিচ্ছে। উভয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ থাকায় বিতর্ক এড়াতে আমার ডিডকৃত সম্পত্তি ছেড়ে দিয়েছি। জমির মালিক জাহাঙ্গীর-বকুল বলেন, ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম কেরুকে দোষ দিয়ে লাভ নেই আমাদের সম্পত্তি পৃথক করে নিচ্ছি। সর্বশেষ এ ঘটনাটি এমপি আকতারুজ্জামান বাবু পর্যন্ত গড়ালে তিনি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।