পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রতি বাংলাদেশের রয়েছে পূর্ণ প্রতিশ্রুতি—রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
নিউইয়র্ক, ২৩ জানুয়ারি : পারমাণবিক অস্ত্রনিষিদ্ধকরণ চুক্তিকার্যকরের ঐতিহাসিক মুহুর্তে জাতিসংঘের কিছু সদস্যরাষ্ট্রের উদযাপন অনুষ্ঠানে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ ও অটল প্রতিশ্রুতির কথা পূর্ণব্যক্ত করলেন জাতিসংঘে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
পারমাণবিক অস্ত্রনিষিদ্ধকরণ চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) কার্যকরের মূহুর্তকে স্মরণীয় করতে গতকাল একযোগে আয়োজিত নিউইয়র্ক, জেনেভা ও ভিয়েনায় ভার্চুয়াল ইভেন্টে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দেয় বাংলাদেশ।
স্মরণীয় অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে মুক্ত করার জন্য ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি অবিচল থাকা বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে একটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের পক্ষে ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশন চলাকালীন ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিটি অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা যেসকল রাষ্ট্র এখনও এই চুক্তি স্বাক্ষর করেননি, তাদের স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান, যাতে এর লক্ষ্যউদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব হয়। পারমাণবিক অস্ত্রের মানবিক প্রভাব বিষয়ে সচেতনতাসৃষ্টির লক্ষ্যে অবদানসৃষ্টিকারী জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমার আঘাত নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিবর্গসহ (হিবাকুশাস) যে সকল কর্মী সুদীর্ঘ সময় ধরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কিত চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক অস্ত্রব্যবহার, বিকাশ, পরীক্ষা, উৎপাদন, মজুদকরণ, কেন্দ্রস্থাপন, স্থানান্তর, এবং হুমকিপ্রদান নিষিদ্ধ করতে এটিই হচ্ছে প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি। চুক্তিটিতে এ পর্যন্ত ৮৬টি দেশ স্বাক্ষর করেছে এবং ৫১টি দেশ অনুসমর্থন করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ৫০তম অনুসমর্থনকারী দেশ হিসেবে হন্ডুরাসের দলিলাদি জমা দেয়ার ৯০ দিন পর আজ ২২ জানুয়ারি ২০২১ থেকে চুক্তিটি কার্যকর হলো। অনুষ্ঠানটি অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, কোস্টারিকা, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ড এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যান্যের মধ্য ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন টু অ্যবলিস নিউক্লিয়াস উইপন এর প্রধানগণ বক্তব্য রাখেন। জাতিসংঘ মহাসচিব অনুষ্ঠানটি উপলক্ষ্যে একটি ভিডিও বক্তব্য প্রদান করেন।
