প্রধান মেনু

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় হুইলচেয়ারে করে এসে বই কিনলেন হাবিব; চোখে মুখে হাসি

শেখ সাখাওয়াত হোসেন, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ২৯তম বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবে বাধা হতে পারেনি কোমরের জিন শক্তি না থাকায় হুইলচেয়ারে চলাফেরা করা আহসান হাবীব তুষারের। কোমরের জিন শক্তি না থাকলেও তার বই কেনার আগ্রহ-কে হারাতে পারেনি। হুইলচেয়ারে বসে বই কিনছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বইয়ের টানে বই মেলার তৃতীয় দিন ৮ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেলে উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়ন থেকে মেলায় এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে তার মা ও পরিবারের সদস্যরা।
মেলা প্রাঙ্গণে হুইলচেয়ারে করে এই স্টল থেকে ওই স্টলে ঘুরছিলেন তিনি। চোখে-মুখে আনন্দ। বই মেলার মূল অংশে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্টল থেকে চারটি পছন্দের বই কেনেন তিনি। জানালেন, এবার বইমেলায় প্রথম আসা। তাঁর পাশে থাকা মা নুরুন্নাহার যোগ করেন, আর কোন কোন বই কেনা যায়, তা ঘুরে ঘুরে দেখছি। তাই তাঁর পরিবারের সঙ্গে মেলায় এসে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে গেলেন।
আহসান হাবীব উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের মন্ডতোষ গ্রামের মো: হাবিবুর রহমান হাবিবের ছেলে। তুষার মন্ডতোষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। মন্ডতোষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরুজ্জল ইসলাম জানান, তুষারের বই পড়ার ইচ্ছা প্রবল।
আহসান হাবীব তুষারের মা নুরুন্নাহার খাতুন দৈনিক বাংলাদেশ পত্রিকার পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া থানা প্রতিনিধি শেখ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে আলাপচারিতায় জানান, আজকে আমার ছেলে বইমেলাতে এসে বই কিনবেন বলে বায়না ধরেন। আমি রাজি হয়ে যাই এবং ছেলেকে নিয়ে আসি। এত সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি আবু সাঈদ বাদশা, সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বাবুলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। খুবই সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে।
ভাঙ্গুড়া থানা প্রশাসনের তৎপরতা রয়েছে। মেলাতে আগত সকল দর্শনার্থী নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের বই কেনাকাটা করছেন। আহসান হাবীব তুষারের পিতা: হাবিবুর রহমান হাবিব মোবাইল ফোনে জানান, আমার ছেলে ৬ বছর  বয়স পর্যন্ত ভাল ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তার কোমরের জিন শক্তি হারিয়ে গেলে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। অনেক চিকিৎসা করিয়েছি কিন্তু ভালো হয়নি। একমাত্র ছেলেকে রোজ রোজ বিদ্যালয়ে সাথে নিয়ে যেতে হয়। সাথে না গেলে সিঁড়ির ধাপ পার হতে পারেনা ভীষণ কাঁদে।
আমার সন্তান কে নিয়ে আমি আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখি। সিঁড়ি ধাপের বিশেষ পদ্ধতি না থাকায় নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কাছে আবেদন বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ধাপে বিশেষ ব্যবস্হা নিয়ে আমার সন্তান-কে সহজে শ্রেণি পাঠ গ্রহণের সুযোগ করে দিবেন। কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি দিবেন কি?