প্রধান মেনু

পাইকগাছায় তফেল ঔষধালয়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ভারতীয় ঔষধ

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ পাইকগাছা পৌর সদরে প্রশাসনের নাকের ডগায় তফেল ঔষধালয় ও দাওয়াখানায় মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং ভারতীয় ইউনানী ও আর্য়ুবেদী ঔষধ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ধরণের ঔষধ কিনে একদিকে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ। অপর দিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ছে এলাকার সহজ সরল সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট ঔষধালয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী। প্রাপ্ত সূত্রে জানাগেছে, পৌর সদরে বেশ কয়েকটি ইউনানী ও আর্য়ুবেদী ঔষধালয় গড়ে উঠেছে।

যার মধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তফেল ঔষধালয় ও দাওয়াখানা। বাবা-ছেলে দু’জন মিলেই ঔষধালয়টি পরিচালনা করছেন। অভিযোগ উঠেছে ঔষধালয়ের ডাঃ হাকিম আমির হোসেন কোন এমবিবিএস ধারী ডাক্তার না হয়েও তার ব্যবস্থাপত্রে ডাঃ হাকিম সহ অনেক পদ পদবী ব্যবহার করছেন। ঔষধালয়ে এমন কোন রোগ নেই যে রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হয় না। ক্যান্সার নিরাময় থেকে শুরু করে নিঃসন্তান দম্পত্তিকে সন্তান দানের সক্ষমতা রাখেন কথিত এই ডাক্তার।

এলাকার সহজ সরল মানুষ রোগ নিরাময়ের আসায় উক্ত দোকানে এসে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। ডাঃ আমির হোসেন শুধু চিকিৎসা দিয়ে খ্যান্ত নন তিনি দোকানে রেখে বিক্রি করছেন ভারতীয় ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ। তার দোকানের বেশিরভাগ ঔষধই মেয়াদ উত্তীর্ণ। উপজেলার খড়িয়া গ্রামের ইব্রাহিম মিস্ত্রীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৫) শুক্রবার চিকিৎসার জন্য তফেল ঔষধালয়ে যান। এসময় ডাঃ ও হাকিম আমির হোসেন তাকে ৩ ধরণের সিরাপ ও ৩ ধরণের ট্যাবলেট লেখেন। এ সমস্ত সকল ঔষধ তার দোকান থেকেই বিক্রি করা হয়। গ্রামের সহজ সরল শরিফুল অন্ধ বিশ্বাস করে ঔষধ গুলো বাড়ী নিয়ে যায়। এরপর বাড়ীতে নেওয়ারপর তার পরিবারের লোকজন দেখেন ইন্টারো কুইনাল নামে একটি ঔষধ ভারতীয়। অপরদিকে বৃঃ অগ্নি কুমার রস ও এটরোপা সিরাপের মেয়াদ উত্তীর্ণ।

উক্ত ঔষধের মেয়াদ শেষ হয় ২৬/০৭/২০১৮ ইং তারিখে। পরে শনিবার সকালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ নিয়ে শরিফুল হাজির হন তফেল ঔষধালয়ে। এ ধরণের ঔষধ বিক্রি করায় শরিফুলের সাথে ডাঃ আমির ও তার ছেলের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আমির হোসেন জানান, ক্রেতা তেমন লেখাপড়া জানেনা এবং গাঢ় কালি দিয়ে লেখা থাকায় মেয়াদের বিষয়টি অস্পষ্ট ছিল। ব্যবস্থাপত্রে ডাঃ লিখেছেন এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঔষধ কোম্পানির লোক ব্যবস্থাপত্র (প্যাড) ছাপিয়ে দিয়েছেন। ডাক্তার শব্দটি তারাই দিয়েছে।

মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ প্রসঙ্গে তিনি অবাক করার মত জবাব দেন, তিনি বলেন, ঔষধের মেয়াদ শেষ হওয়ারপর যত বেশি সময় অতিবাহিত হবে ততই ঔষধের বেশি কাজ করবে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতা ফোরামের সভাপতি জিএমএম আজাহারুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের কোন তদারকি না থাকায় আর্য়ুবেদী দোকানগুলোতে অবাধে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিষিদ্ধ ঔষধ বিক্রি হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ একদিকে অর্থনৈতিকভাবে, অপরদিকে স্বাস্থ্যগত ভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অবিলম্বে এ ধরণের ডাক্তার ও ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন ফোরামের এ নেতা।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডাঃ মোঃ আব্দুল আউয়াল জানান, যে সকল ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ড্রাগ সুপার খুলনা আব্দুর রশিদ জানান, এ ধরণের সেবা, ব্যবসা ও কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় সোচ্চার রয়েছি। আমাদের অভিযান সব সময় চলমান রয়েছে। যারা এ ধরণের সেবা ও ব্যবসায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



(পরের খবর) »