পাঁচবিবিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন দাম না থাকায় হতাশ কৃষক

মোঃ বাবুল হোসেন, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ বালাই কম হওয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকেরা। আমনের মাঠ দুলছে কার্তিকের হাওয়ায়। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের সর্বত্র ধানে ভরা বিস্তৃত মাঠ দেখে দু চোখ জুড়িয়ে যায়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আমনের আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৯শ ৯৯ হেক্টর জমিতে।ফলনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সোনাপাড়া গ্রামের বয়ো বৃদ্ধ কৃষক খলিল জানান, যেসব কৃষক আগাম ধান রোপন করেছে তারা স্বল্প আকারে ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে। তবে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা মাড়াই পুরোদমে শুরু হবে। সড়াইল গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক ও কাঁটাপুকুর গ্রামের কৃষক আলীম বলেন, ৩৩ শতাংশ জমিতে ধান রোপন, সার, বীজ, ওষুধ, নিড়ানী, কাটা মাড়াই করতে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৫শ টাকা।
বর্তমানে বাজারে প্রতিমন (৪০ কেজি) ধান ৬শ থেকে ৬৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ বিঘা জমিতে (৩৩ শতাংশ) ধান উৎপাদন হচ্ছে ১০/১২ মন। সেই হিসাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে। যেসব কৃষক লিজ নিয়ে আবাদ করেছে তাদের লোকসানের পরিমান আরও বেশি। লাভ লোকসান যাই হোক না কেন খড়, গুড়া ও চালের জন্য আমরা ধান আবাদ করে থকি। তারা আরো বলেন, এবারে বৃষ্টি কম হওয়ায় কিছু কিছু জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। ফলে বাড়তি খরচ হয়েছে। ধানের দাম প্রতি মন ১ হাজার টাকা হলে কৃষক লাভবান হতো। দাম আশানুরুপ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা।
সাধারণত মৌসুমের শুরুতে কম দামে ধান কেনার চেষ্টা করে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ফরিয়া, দালাল ও মধ্যস্বত্ত¦ ভোগীদের কারনেও কৃষকেরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়। কৃষকদের অধিকাংশ গরীব হওয়ায় চড়া সুদে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। ফলে পাওনাদারদের চাপে মৌসুমের শুরুতে অল্প দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, রোগ বালাই কম থাকাই এবার আমন ধানের আবাদ ভাল হয়েছে। ফলনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।