নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তুরস্ক ও জাপান সফরে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ‘এমওইউ’ স্বাক্ষর উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন
গাজী রুবেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সমার্বতন ২০১৯ সফলভাবে অনুষ্ঠিত এবং উপাচার্যের তুরস্ক ও জাপান সফরে বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ‘এমওইউ’ স্বাক্ষরিত হওয়ায় এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠান আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. সৈয়দ আতিকুল ইসলাম, আইআইএস এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. আবদুল্লাহ-আল-মামুন, আইআইটি এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার প্রফেসর মোঃ মমিনুল হক, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. এমডি. মাসুদ রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. গাজী মো. মহসীন, অফিসার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি ডা. মো. মোখলেস-উজ-জামান প্রমূখ।
উপাচার্য তার বক্তব্যের শুরুতে আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিরসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। এবং ঐতিহাসিক ক্ষণটির কথা স্মরণ করে আমি বক্তৃতার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ৩০ লক্ষ বাঙালির আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ উপলক্ষে আজ সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপাচার্য মুজিব নগর সরকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বারোপ করে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তন ২০১৯ অনুষ্ঠিত
হয়েছে। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো: আবদুল হামিদ তার দেয়া সমাবর্তন ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিষয়ক বিভাগসহ আইন, শিক্ষা, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু ও গবেষণার সুযোগ রাখায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উপাচার্য জানান, সমাবর্তনের পরদিন রাতেই উপাচার্য তুরস্ক যান। ২৭ ফেব্রুয়ারি ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। ২৮ মার্চ ২০১৯ হতে ০৮ এপ্রিল পর্যন্ত জাপানের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে জাপান সফর করেন তিনি। এ সফরে বিষয় ছিলো জাপানের কিউসু ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান।
এ সফরে নোবিপ্রবি ও জাপানের উতসোনোমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Utsunomiya University) মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা সহযোগিতা চুক্তি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে তিনি নোবিপ্রবি’র পক্ষে স্বাক্ষর করেন, এসময় পক্ষে উতসোনোমিয়ার পক্ষে স্বাক্ষর করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মিয়োশু আয়ামা। এই চুক্তির আওতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই জাপানের উতসোনোমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে। পাশাপাশি উতসোনোমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নোবিপ্রবিতে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে।
নোবিপ্রবি প্রকৌশল অনুষদ এবং উতসোনোমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউর আওতায় উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পাবে। এতে করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান বিশ্বমানের হওয়ার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো। উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের জানান, জাপান সফরের এক পর্যায়ে ৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে জাপান ভিত্তিক বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের সংগঠন তকুরঞ্জি আমাকে এশিয়ান বুদ্ধিস্ট পিস অ্যাওয়ার্ড -২০১৯ এর ‘দ্যা ফ্রেন্ড অব হিউম্যানিটি’ পদক প্রদান করে।
নাগোয়ায় তকুরঞ্জি টেম্পলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারা আমাকে এই সম্মাননা দেয়। প্রতিবছর গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সারা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে স্কলাররা যোগ দেন। মানবাধিকার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা এবং দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নারীর উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য প্রতিবছর একজন স্কলারকে ‘দ্যা ফ্রেন্ড অব হিউম্যানিটি’ পদক দেয়া হয়। এবার এ পদকটি আমাকে দেওয়া হয়। আমি পদকটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহিদদের প্রতি উৎসর্গ করি।