নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ৮৮ শতাংশ — এলজিআরডি মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহে ৮৮ শতাংশ কভারেজ অর্জন করেছে। আমরা এখন একটি নিরাপদ টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির জন্য জোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করছি। ভূ-গর্ভস্থ পানি সম্পদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনা করে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিভিন্ন নীতিমালা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’ মন্ত্রী আজ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) আয়োজিত ‘বিশ^ পানি দিবস ২০১৯’-এর সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান। মূল নিবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোঃ মুজিবুর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত মিস চ্যারিওট্টা স্কি¬টার। মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানীয় জল মানুষের একটি মৌলিক অধিকার এবং জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পানি সম্পর্কিত লক্ষ্য অর্জনে সবার জন্য পর্যাপ্ত ও সমতাভিত্তিক পানি নিশ্চিত করা, প্রত্যেক নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং অন্যান্য পানি সম্পর্কিত পরিবেশে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণকে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
নিরাপদ পানির গুরুত্ব উপলব্ধি করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট- ৬ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এর অধীনে ছয়টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সন্তোষজনক। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমানো, শিল্পায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, পানি ও স্যানিটেশনজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকিহ্রাস, দেশব্যাপী স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রসার, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবিলা প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা সীমিত সম্পদ নিয়ে লক্ষ্য অর্জনের ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারের কর্মকা-ে এদেশের জনগণের পূর্ণ সমর্থনের জন্যই দেশ আজ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করছে। মন্ত্রী আরো বলেন, যে সকল স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভবপর নয় কিংবা গভীর স্তরে লবণাক্ততা প্রবেশ করেছে সে সকল স্থানে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ব্যবহারের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
সংরক্ষণের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ৫৫৪টি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি স্থাপন করা হয়েছে। এ সকল উৎসের মাধ্যমে বৃষ্টি পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত নিরাপদ পানি সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে। আরো এক লাখ সংরক্ষণ পদ্ধতি স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্প স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ ৩০ হাজার ওয়াশ ব্লক স্থাপন করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উক্ত কার্যক্রম নিশ্চিত করা হবে।