নিরবে নিভৃতে চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সফিকুল আলম চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের কৃতী সন্তান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ’৬৯ এর লৌহমানব কিছুটা নিরবে নিভৃতে চলে গেলেন অনেকটা অভিমান করে। তিনি পাননি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রয় সীকৃতি। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের সফিকুল আলম চৌধুরী রোববার সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাধ্যক্যজনিত রোগে আক্রাšত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
সোমবার বিকেলে জানাজা শেষে তাঁর নিজ বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের গোয়াগ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। আর এর মধ্য দিয়ে সফিকুল আলম চৌধুরী নামের এক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের নাম লেখা হলো ইতিহাসের পাতায়। হাজারো মানুষের ভালোবাসা নিয়ে তিনি চলে গেলেন। বরই পরিতাপের বিষয় তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সীকৃতি এখন পর্যন্ত পাননি।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকি¯তানি হানাদার বাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ের তৎকালিন ইপিআর ক্যাম্পে (বর্তমানে বিজিপি ক্যাম্প) ১৩ দিন বাঘের খাঁচায় বন্দি করে রেখেছিল সফিকুল আলম চৌধুরীকে। ১৩ দিন এক খাঁচায় থাকলেও বাঘ তাঁর কোন ক্ষতি করেনি। সে সময় বাঘের খাঁচা আর পাকি¯তানিদের নির্যাতন থেকে কোন মতে জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরে ছিলেন সফিকুল আলম চৌধুরী।
স্বধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে পাঁচপীর ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়ে ছিলেন। কমিউনিষ্ট পাটির একজন বলিষ্ট নেতা থেকে তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে এসেছিলেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যšত বোদা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি থেকে দলের অনেক গুরুত্ব পূর্ণ পরামর্শ দিয়ে গেছেন।
জীবদ্দশায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানটুকু তার মিলেনি। সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের সময় তাঁর নাম সর্ব সম্মতিক্রমে বাছাই কমিটির কাছে গৃহিত হয়ে ছিল ঠিকই কিন্তু তা গেজেট হিসেবে এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মারা যাওয়ার স্বাদটা তাঁর অপূর্ণই রয়ে গেলো। হয়তো অল্প কিছু দিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সফিকুল আলম চৌধুরীর নাম গেজেট ভুক্ত হবে। তাই জোর দাবি উঠেছে, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা জীবদ্দশাতেই যেন তাঁদের যোগ্য সীকৃতি দেয়া হয়।