দেশের কল্যাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে — পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

খাগড়াছড়ি, ৩০ চৈত্র (১৩ এপ্রিল): পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, আমাদের চিন্তা, চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি সবার এক নাও হতে পারে। কিন্তু সকলের একটাই লক্ষ্য দেশটা আমাদের সকলের। দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের স্বার্থের জন্য এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
শুক্রবার রাতে খাগড়াছড়ি নিউজিল্যান্ড এলাকার রাস্তার প্রান্তে ১২ দিনব্যাপী বৈসাবি মেলার সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈসাবি একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। উৎসব উপলক্ষ্যে বৈসাবি মেলা’র এ আয়োজন মানুষের সাথে মানুষের মিলন, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আগের চেয়ে আরো সুদৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, সংস্কৃতিকে আবহমানকাল থেকে ধরে রাখার জন্য মানুষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। মার্জিতভাবে সকল ভালো কাজগুলো সকলের উদ্যাপন করা উচিত। বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের নিজস্ব একটি সংস্কৃতি ও কৃষ্টি আছে। আমার ভাষা, আমার সংস্কৃতি আমার নিজের পরিচয়। অপসংস্কৃতিকে কোনোভাবেই এখানে ধারণ করা উচিত নয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, বৈসাবি বা বৈসু উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতা গড়ে উঠবে। সকল ভাষাভাষি ও সকল সংস্কৃতি কৃষ্টির মাঝে ঐক্যের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে আরো এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠী একাকার হয়ে উন্নয়নের অংশীদার হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আমরা পার্বত্যবাসীদের সে লক্ষ্য পূরণে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য অঞ্চলের ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত সেই ১৯৯৭ সালের ০২ ডিসেম্বর একক প্রচেষ্টায় নিরসন করেছিলেন। নতুনভাবে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত সৃষ্টি করা হলে আমাদের আগামী দিনের জন্য হবে অত্যন্ত খারাপ। তিনি বলেন, ১৪৩১ বাংলা সনে আমাদের অঙ্গীকার হউক, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থেকে দেশের কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে যাতে প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হই।
উল্লেখ্য, গত ১লা এপ্রিল থেকে বৈসাবি উপলক্ষ্যে মেলার আয়োজন হয়। বৈসাবি এ মেলায় বিভিন্ন পাহাড়ি পণ্যসামগ্রীর স্টল দিয়ে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা ১২ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত মেতে ছিল। এ মেলার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে।পরে প্রতিমন্ত্রী মেলা উদ্যাপন কমিটি আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় খাগড়াছড়ি বৈসাবি উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক রবি শংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোঃ শানে আলম, মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।