প্রধান মেনু

দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা ৫ কার্তিক (২১ অক্টোবর): রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আবহমানকাল ধরে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপাচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন করে আসছে। দু

র্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী একত্রিত হন, মিলিত হন আনন্দ-উৎসবে।তাই এ উৎসব সার্বজনীন। এ সার্বজনীনতা প্রমাণ করে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। রয়েছে প্রকৃতির সাথে নিগূঢ় সম্পর্ক। সে সম্পর্ক শরতের শুভ্রতা আর নীলিমাকে ধারণ করে হৃদয়ে এনে দেয় পূণ্যের শ্বেতশুভ্র আবহ। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক; ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দের বন্ধন আরো সুসংহত হোক-এ কামনা করি।করোনাভাইরাস মহামারি গোটা বিশ্বকে এক চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।লক্ষ লক্ষ মানুষ অকালে ঝরে গেছে। বাংলাদেশেও নানা পেশার ও বয়সের মানুষ ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। পাশাপাশি অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা- বাণিজ্য, কর্মসংস্থানসহ জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

করোনাভাইরাস এক অদৃশ্য শত্রু। এর বিরুদ্ধে জয়লাভ করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সচেতনতা ও সম্মিলিত উদ্যোগ খুবই জরুরি। আমি আশা করি দুর্গোৎসবের প্রতিটি কার্যক্রম আপনারা স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে পালন করবেন।মানবতাই ধর্মের শাশ্বত বাণী। ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে আহ্বান করে, অন্যায় ও অসত্য থেকে দুরে রাখে; দেখায় মুক্তির পথ। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি আমাদেরকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। দুস্থ ও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য।

সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ ও সম্প্রীতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে উদ্বুদ্ধ করুক, বিশ্ব মানবতার জয় হোক-এ প্রত্যাশা করি। শারদীয় দুর্গোৎসব সফল হোক, কল্যাণময় হোক-এ কামনা করি।

জয় বাংলা। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে আমি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ‘

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’-এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে পালন করে থাকি। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সকলে মিলে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। এই দেশ আমাদের সকলের। বাংলাদেশ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার উন্নয়ন করে যাচ্ছে।করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের সরকার এ সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আমরা জনগণকে সকল সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এসময় সকলকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে। পাশাপাশি আমি এই মহামারিতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্‌যাপনের অনুরোধ জানাই। আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’