দিশেহারা চাষি, ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা গাংনীতে ভুট্টা ক্ষেতে ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকার আক্রমণ
নিজস্ব প্রতিনিধি, গাংনী ঃ মারাত্মক ক্ষতিকারক পোকা ‘ফল আর্মি ওয়ার্ম’। ফসল বিধ্বংসী এই পোকা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা সীমান্ত এলাকার ভুট্টা ক্ষেতে আক্রমন করেছে। গত এক সপ্তাহ আগে তেঁতুলবাড়িয়া, কারিগর পাড়া, খাসমহল, রংমহলসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে এ পোকা ছড়িয়ে পড়েছে। কোন কীটনাশক পোকা দমনে কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে হাত দিয়ে পোকা ধরা, প্লাবন সেচ সব সময়ে সেচ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা, সেক্সফেরামন স্থাপান করার পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার।
অনুকুল আবহাওয়া আর বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মেহেরপুরের গাংনীর চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়ে। বেশ কয়েক বছরে কোন রোগ বালাই না থাকায় ভুট্টার কাঙ্খিত ফলনও পান চাষিরা। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়। লক্ষ্য মাত্রা পূরুণের আশা করলেও তা ভেস্তে যেতে বসেছে মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা ফল আর্মি ওয়ার্মের আক্রমণের কারণে। ইতোমধ্যে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে এ পোকা আক্রমণ করেছে।
প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ক্ষেতের পরিমান। কোন প্রতিষেধকই কাজে আসছে না বলে দাবী করছেন চাষিরা। এ পোকা প্রথমে কচি পাতা খেয়ে ফেলে তারপর ভুট্টার মোচার মাঝে ঢুকে যায়। দিনের বেলা পাতার নিচে লুকিয়ে থাকায় কোন কীটনাশক স্প্রে করে কাজ হচ্ছে না। অনেকেই হাত দিয়ে পোকা ধরে মেরে ফেলছেন। অনেকেই ভুট্টার ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। রংমহলের চাষি সোহরাব জানান, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন।
সব ক্ষেতেই এ পোকা আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন বিষ দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। একই কথা জানালেন খাসমহলের চাষি একরাম আলী। তিনি আরো জানান, পোকার আক্রমণ এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে তাতে ভুট্টার ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। অল্প সময়ে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে উপজেলার খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে ফল আর্মি ওয়ার্ম’। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বর্গা চাষিরা। তারা কাঙ্খিত ফলন না পেলে বর্গা নেয়ার টাকা উত্তোলনে ব্যর্থ হবেন। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম সাহাবুদ্দীন জানান, এ পোকা দমনে বা নিয়ন্ত্রনে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। হাত দিয়ে পোকা ধরা, সব সময়ে সেচ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা, সেক্সফেরামন স্থাপান করা এবং এস এম পিভি নামের যে জৈব বালাইনাশক আছে সেটা স্প্রে করার মাধ্যমে এ পোকাটি দমনে উঠান-বৈঠকসহ নানা ভাবে প্রচারনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।