তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২’ উদ্যাপন

ইস্তাম্বুল, তুরস্ক (২১ ফেব্রুয়ারি): ইস্তাম্বুলস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২’ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করেছে। প্রভাতফেরির মাধ্যমে ভাষা শহিদদের স্মরণে কনস্যুলেটে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা হয়। এরপর তুরস্কে বসবাসরত উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং মিশনের কর্মচারীবৃন্দের উপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল মাসুদ পারভেজ জাতীয় পতাকা অর্ধনির্মিতকরণ করেন। কনস্যুলেটের ‘ফ্রেন্ডশিপ হল’-এ ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল মাসুদ পারভেজের সভাপতিত্বে তুরস্কে বসবাসরত উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। এরপর দিবসটির উপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল পারভেজ বক্তব্যের শুরুতে ভাষা সৈনিকসহ সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জাপন করেন, যারা বাংলা ভাষার অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অসামান্য অবদানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি অমর একুশের প্রেক্ষাপট, পটভূমি ও জাতীয় জীবনে এর গুরূত্ব বর্ণনা করে তিনি এর চেতনা ও প্রেরণাকে ধারণ ও লালন করে দেশের উন্নয়নে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান করেন। তিনি মহান ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণাসহ বিশ্বের বিভিন্নদেশে শহিদ মিনার স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও বলিষ্ঠ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি তুরস্কের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলকরণে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আরো অর্থবহ রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জনাব পারভেজ বলেন যে, কনস্যুলেটের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষাশিক্ষা কোর্স চালুর জন্য ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সহযোগিতা প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে ভাষাশিক্ষা কোর্স চালুর জন্য সিলেবাস প্রণয়ন চলমান রয়েছে, খুব শীঘ্রই কোর্স শুরু হবে বলে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন। তিনি বাংলা ভাষা, ইতিহাস, সাহিত্য ও সৃষ্টিশীল কর্ম তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করার ক্ষেত্রে তুরস্কে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতা কামনা করেন। উন্মুক্ত আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তুরস্কে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকাশে তাদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যবান পরামর্শ ব্যক্ত করেন। কনস্যুলেটের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের প্রশংসা করে অংশগ্রহণকারী প্রবাসী বাংলাদেশিবৃন্দ কনস্যুলেটকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন।