ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ১২ ফাল্গুন (২৫ ফেব্রুয়ারি) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানাই।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫-এ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স-এর সদস্যগণ পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এর ফলে সূচিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১৪ হাজার বাঙালি পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য শহিদ হন। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে আত্মাৎসর্গকারী সকল পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জানাই।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। আমরা ধাপে ধাপে বাংলাদেশ পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করেছি। আমাদের সরকার থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে ১০ তলা বিল্ডিং করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। প্রতি বিভাগে একটা করে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। আকাশ পথে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে রাশিয়া হতে ২টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাস নির্মূলে আমরা ইতিমধ্যে পুলিশ এন্টি টেররিজম ইউনিট এবং কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গঠন করেছি। বাংলাদেশ পুলিশে নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ইতোমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জনগণ ৯৯৯ ব্যবহার করে এখন খুব সহজেই ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের সেবা পাচ্ছে।
আমাদের সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও দক্ষ বাহিনীতে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।
জনগণের সেবা করাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। সেখানে কোন ধরনের অনুরাগ বা বিরাগের সুযোগ নেই। দায়িত্ব অবহেলা বা নৈতিক পদস্খলন অমার্জনীয় অপরাধ। আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যগণ মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন।
আমি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”