ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯ জানুয়ারি ‘২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র যৌথ উদ্যোগে মাসব্যাপী ‘২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯’ আয়োজন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বৈশ্বিক বাণিজ্যের যুগে এই মেলা অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের রীতি-নীতি, শর্ত এবং জাতিসংঘের টেকসই নীতিমালা (UN Principles of sustainability ) অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণ, গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং বাজার প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানিকারকদের নানাবিধ প্রণোদনা প্রদান করে আসছে। সেইসাথে, সরকার পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা স্থাপন, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, উদ্ভাবনী কৌশল প্রয়োগ এবং শ্রমিকের কল্যাণ ও মানসম্মত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিতকরণের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, গ্যাস ও বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি, রাস্তাঘাট ও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এ সকল উদ্যোগের ফলে ব্যবসা বাণিজ্যে যেমন গতি সঞ্চারিত হচ্ছে তেমনি অর্থনৈতিক অগ্রগতিও ত্বরান্বিত হচ্ছে। বৈশ্বিক প্রবণতা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের বাণিজ্য নীতিসমূহ বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিশ্ব বাজারে আমাদের উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবা সরবরাহে উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রয়োগ এবং কর্মদক্ষতায় ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
আমি আশা করি, এই মেলা আমাদের উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে শাণিত করবে এবং প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। আমাদের উদ্যোক্তাগণ পারস্পরিক কল্যাণ এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করবে। আমি এই মেলার অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। আমি ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। আমি আশা করি এ আয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে যোগসূত্র স্থাপনের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পের প্রসারে সারাদেশে স্থাপন করা হচ্ছে হাইটেক পার্ক।
সরকারের এ সকল বহুমুখী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ও অর্থনীতির দ্রুত বিকাশে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ব্যবসায়িক আয়োজন। উৎপাদক-রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসাধারণকে একক প্লাটফর্মে সমবেত করার ক্ষেত্রে মেলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মেলায় উৎপাদকরা মানসম্মত, উদ্ভাবনী ও ফ্যাশনেবল পণ্যসম্ভার ক্রেতা দর্শনার্থীদের সম্মুখে উপস্থাপনের যেমন সুযোগ পায় তেমনি দর্শনার্থীরাও পণ্যের মান ও দামের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করার সুযোগ লাভ করে। এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উৎকৃষ্ট মানের পণ্যসম্ভার ও সেবা প্রদর্শনের মাধ্যমে আরো আকর্ষণীয় হবে-এ প্রত্যাশা করি।
দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান, রপ্তানিকারক, আমদানিকারক ও সরবরাহকারীসহ ক্রেতা-দর্শকবৃন্দ ডিআইটিএফ-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিকে আরো বেগবান করতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। সকলের অংশগ্রহণে মেলা আরো প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর হয়ে উঠুক – এ প্রত্যাশা করি। আমি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯ এর সার্বিক সফলতা কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।