ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে গতিশীল হয়েছে ঝিমিয়ে পড়া পাইকগাছা উপজেলা পোস্ট অফিসের কার্যক্রম

এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা (খুলনা) ॥ ডিজিটাল সেবার আওতায় আনা হয়েছে পাইকগাছা উপজেলা পোস্ট অফিসের প্রায় সকল কার্যক্রম। কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে এক সময় গ্রাহকরা গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে ঝিমিয়ে পড়ে পোস্ট অফিসের সকল কার্যক্রম। ২০১০ সাল থেকে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু হওয়ার পর থেকে প্রাণ ফিরে পেয়েছে এক সময়ের ঘুনে ধরা, ঝিমিয়ে পড়া পোস্ট অফিস। জনবল বৃদ্ধি, ডিজিটাল উপকরণ সরবরাহ ও গ্রাহকদের বসার সুব্যবস্থা করা হলে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম আরো অনেক বেশি গতিশীল হবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ ও গ্রাহকরা।
সূত্র মতে, এক সময় উপজেলা পর্যায়ে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পোস্ট অফিস। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার দেশে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করার পর সরকারি সেবাপ্রদানকারী বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান অনলাইন সেবার আওতায় আসায় পোস্ট অফিসের কার্যক্রম অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়ে। দ্রুত সেবার পাওয়ার লক্ষে পোস্ট অফিসের সাধারণ গ্রাহকরা ঝুকে পড়ে অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে। সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ২০১০ সালে পোস্ট অফিসের সেবা কার্যক্রমও অনলাইন সেবার আওতায় আনা হয়।
স্থাপন করা হয় ই-সেন্টার ও অন্যান্য সেবা প্রদান করা হয় অনলাইনের মাধ্যমে। ই-সেন্টারের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণী পাশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবদের ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে প্রদান করা হয় সনদপত্র। এর মাধ্যমে আত্ম কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে শতশত শিক্ষিত বেকার যুবকদের। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গ্রাহকরা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন বিশ্বের যেকোন দেশে। চাকুরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ এবং পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রদান করা হয় ই-সেন্টারের মাধ্যমে।
২০১৭ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এর কার্যক্রম চলমান রেখেছেন পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। আছে অনলাইন সেবা কার্যক্রম। এর মাধ্যমে স্বল্প খরচে ইএমটিএস (ইলেকট্রিক মানি ট্রান্সফার) করতে পারছেন গ্রাহকরা। সেবা গ্রহণকারী অনামিকা মন্ডল জানান, অনলাইন সেবা কার্যকম চালু করায় আমরা এখন অতি সহজেই সেবা গ্রহণ করতে পারছি। এতে সময়ও সাশ্রয় হচ্ছে। অনামিকার মত প্রতিদিন শতশত গ্রাহকরা এ সেবা গ্রহণ করছেন। আছে নগদ সেবা চালু। তবে ঘরে ঘরে বিকাশ সেবা পৌছে যাওয়ায় পোস্ট অফিসের সেবা গ্রহণে সাধারণ গ্রাহকদের কিছুটা অনিহা আছে জানিয়ে উপজেলা পোস্ট মাস্টার কফিল
বিশ্বাস জানান,
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সঞ্চয়পত্র সহ সবধরণের সেবা কার্যক্রম অনলাইন সেবার আওতায় আনা হবে। এটা হলে ঘরে বসেই সাধারণ মানুষ পোস্ট অফিসের সেবা গ্রহণ করতে পারবে। পোস্ট মাস্টার জানান, এক সময় পোস্ট অফিসে গ্রাহকদের উপস্থিতি খুবই কম ছিল। এখন উপস্থিতি দেখলেই বোঝা যায় পোস্ট অফিসের কার্যক্রম কতটা গতিশীল হয়েছে। সাধারণ মানুষ কতটা পোস্ট অফিসের সেবা গ্রহণ করছে। তবে কর্তৃপক্ষ ও গ্রাহকদের দাবী, পর্যাপ্ত ডিজিটাল উপকরণ সরবরাহ, জনবল বৃদ্ধি ও গ্রাহকদের জন্য বসার সুব্যবস্থা করা গেলে পোস্ট অফিসের সেবার মান আরো অনেক বেশি গতিশীল হবে এবং সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।