ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে — আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আজ এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনে ‘পঞ্চম ই -গভর্নেন্স সম্মেলন ২০১৯’ এর দ্বিতীয় দিনে মিনিস্টেরিয়াল প্যানেল আলোচনায় আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। উক্ত সেশনে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। প্যানেল আলোচনায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুতগতির ইন্টারনেটের যুগে নিজ সোসাইটির ট্রান্সফর্মেশন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছেন। এই রূপকল্প বাস্তবায়নে চারটি স্তম্ভ বা পিলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়ন, ইন্টানেটের সংযোগ দেয়া, ই-গভর্নেন্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পখাত গড়ে তোলা। এই চারটি মূল লক্ষ্য বা পিলারে বাংলাদেশকে দাঁড় করানো হচ্ছে’। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত দশ বছরে আইসিটিখাতে এক মিলিয়ন জনবলের কর্মসংস্থান হয়েছে। দশ বছর আগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫ মিলিয়ন। ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ার কারণে মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারত না। বর্তমান সরকার এর দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এনেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ব্রডব্যন্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিচ্ছে।
এর ফলে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে প্রায় সাড়ে ৯ কোটিতে পৌঁছেছে। ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি ছাড়া ডিজিটাল ইকোনমি সম্ভব নয় উল্লেখ করে পলক বলেন, সরকার শহর থেকে গ্রামে ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিতে ৫’শ এর অধিক ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করেছে। প্রতি মাসে ৬ মিলিয়ন মানুষ এই ডিজিটাল সেন্টার থেকে ২শ’ এর অধিক বিভিন্ন সেবা পাচ্ছে।
তিনি বলেন গত দশ বছর আগে আইসিটি খাতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬ মিলিয়ন ডলার। সরকারের ব্যবসাবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বর্তমানে রপ্তানির পরিমাণ ১ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। সরকার উদ্যোক্তাদের জন্য ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট প্রদান, মেন্টরিং, কোচিং ও রিসার্চ ডেভেলপমেন্টের জন্য ২৮টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সকল হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাগণ সবধরনের সহায়তা পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো জানান, সরকার আগামী ৫ বছরে আইসিটি খাতের রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীতকরণ, ৯০ ভাগ সেবা অনলাইনে প্রদান, দেশের শতকরা শতভাগ জনগণকে কানেক্টিভির আওতায় আনা এবং আরো ১ মিলিয়ন জনবলের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। সেশনে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী ও আইসিটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এসব কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।