টেলিকম খাতের সকল লোকসানি কোম্পানিকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণের উদ্যোগ নিতে হবে — জুনাইদ আহমেদ পলক

ঢাকা, ৩০ পৌষ (১৪ জানুয়ারি) : ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আগামী ৩০জুনের মধ্যে টেলিকম খাতের সকল লোকসানি কোম্পানিকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এই জন্য সংশ্লিষ্টদের ইনট্রিগেটি, ইনক্রিয়েস ইফিসিয়েন্সি, ইমপ্রুভ প্রসেস এন্ড পারফরমেন্স, ইনট্রেক উইথ রেগুলেটর্স, ইনভেস্টমেন্ট এট্রেকশন এবং আইটি এন্ড আইটিস এক্সপোর্ট প্রমোশন ইংরেজি শব্দের আই আদ্যক্ষর এই ৬টি আই মেনে চলতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন দপ্তর ও সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এই নির্দেশনা প্রদান করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং এর অধীন দপ্তর ও সংস্থা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক সভায় প্রোডাকটিবেলিটি, প্রোডাক্ট ডাইভারসিটি প্রমোশন এবং প্রসেস টু কানেক্ট কাস্টমার এই চার শব্দের পি আদ্যক্ষরের ওপর কাজ করতে প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ৪ টি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত – স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি। গত মেয়াদে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা তৈরি করেছি।
আমরা প্রায় ৪০ টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছি যেগুলো আমাদের যাত্রা শুরু করার জন্য বাস্তবায়ন করা দরকার। এই মেয়াদে আমাদের চ্যালেঞ্জ হল আমরা দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার সাথে ৪ টি স্তম্ভের অধীনে সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম তা নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো, সাশ্রয়ীমূল্যের ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এবং আইসিটি সেক্টরের বিকাশের ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম, সততা, সাহস এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা দিয়ে, চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করা সম্ভব।
পরে প্রতিমন্ত্রী এমটব, বাক্কো, আইএসপিএবির নেতৃবৃন্দ এবং মোবাইল ফোন অপারেটরসমূহের সিইও সহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ব্যতিক্রমি অভ্যর্থনাঃ এর আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবের নেতৃত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং এর অধীন দপ্তর ও সংস্থার পক্ষ থেকে ফুলেল অর্ঘ্যের প্রথাগত পদ্ধতির পরিবর্তে প্রতিমন্ত্রীকে অভিনন্দন পত্র দিয়ে অভিনন্দন জানান। প্রতিমন্ত্রী কৃচ্ছতা সাধনে সরকারি নীতির সাথে বিষয়টি খুবই মানানসই হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
প্রতিমন্ত্রী তার লেখা ডিজিটাল বাংলাদেশ এক সফল উন্নয়ন দর্শন এবং জাতীয় সংসদে শিরোনামের দুটি বই উপহার দেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তৃতীয়বারের মতো প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন জুনাইদ আহমেদ পলক। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। এর আগে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ২৮ বছর বয়সে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
তিনি ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চতুর্থ বারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং প্রাইভেট মেম্বারস বিল সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্যারাম ফেডারেশনের সভাপতি এবং ২০১১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্যারাম ফেডারেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ এবং ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা দুই মেয়াদে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী এবং নির্বাচনকালীন সময়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।