ঝিনাইদহের পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর বাজারের জমাজমি বিরোধে শিশুসহ ৪ জন আহত

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ৯নং পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর বাজারের পাশে ভূপতিপুর গ্রামে জমাজমি নিয়ে বিরোধের ধরে শিশুসহ ৪জন আহতের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে মধুপুর চৌরাস্তার মোড়ে এবং ভূপতিপুর গ্রামে পৃথক এই মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় একই পক্ষের সাইদুর রহমান, হামজা রহমান, লাবনী খাতুন ও শিশু জান্নাতুলসহ ৪ জন আহত হয়। আহতরা ঝিনাইদহ সদর
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
জানা গেছে, পোড়াহাটি ইউনিয়নের চাপড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল হক মোল্লার ছেলে মনিরুজ্জামান, ভূপতিপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল হালিমের নিকট থেকে গত ১৯/০৭/২০১৮ ইং তারিখে ১৯২নং ভূপতিপুর মৌজার, আরএস ৪৯ খতিয়ানের ৩৪৬নং দাগ থেকে ৫শতক জমি ক্রয় করেন, যাহার রেজিঃ দলিল নং ৬৭০৮। এবং জমি ক্রয় করার পর থেকে তিনি ওই জমিতে আধাপাঁকা ঘর তৈরী করে বসবাস করে আসছে।
কিন্তু একই গ্রামের মৃত রফিউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আব্দুল লতিফ ওই জমি থেকে দুই শতক জমি ক্রয়করতে চাইলে মনিরুজ্জামান বিক্রয় করতে অস্বীকার করায়, আব্দুল লতিফ জমিটা জবরদখলে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং ঝিনাইদহ বিজ্ঞ আদালতে একটি আমানতের মামলা করে,যাহার মামলা নং ৯৮/১৮। মামলাটি আদালতে বিচার প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় চলমান রয়েছে এবং আদালত থেকে একটি সরেজমিন দখলের তদন্ত হয়। আজ শনিবার আদালত থেকে সকালে একটি তদন্ত টিম এসে সরেজমিন তদন্ত করার কথা ছিলো। সে কারনে আমানতকারি সাথে প্রতিপক্ষের সকালেই এক সংর্ঘষের ঘটনায় তারা বাড়ি ছাড়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে ও মামলার রায় পক্ষে নেওয়ার জন্যই বিবাদীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং মারপিট করে মারাক্তক আহত হয়ে বিবাদী পক্ষ বাড়ি ছাড়া করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রতিপক্ষ ছাড়াই বাদীপক্ষ ইচ্ছামত উপস্থাপন করেন। আহত হামজা রহমান জানান, গ্রামের এক লোকের সাথে আমার চাচার জমি নিয়ে গোলযোগ চলছে। সেই জের ধরে আজ সকালে আমি আর আমার বাবা ঝিনাইদহে যাচ্ছিলাম। আসার পথে চৌরাস্তা বাজারের উপর থেকে আব্দুল লতিফের সহযোগীতায় ২০/২৫জন হঠাৎ করে আমাদের উপর হামলা চালায়।
আমাকে মারার পর অচেতন হয়ে পড়লে লোকজন আমকে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে আমার আত্মীয়স্বজনের কাছে ফোনদিলে আমাকে তারা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। বিবাদী মনিরুজ্জামানের স্ত্রী লাবনী বেগম জানান, আমাদের ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তারপরও আমরা ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। আজ হঠাৎ করে ৫০/৬০জন লোক আমাদের বাড়িতে এসে হইহোল্লাহ শুরু করে এবং বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই পুরুষ-মহিলারা এসে আমার ঘরের দরজা ধাক্কা-ধাক্কি শুরু করে।দরজা ভাঙ্গার উপক্রম হলে আমি একপযায়ে দরজা খুলতে বাধ্য হয়। দরজা খুলতেই কিছু পুরুষ- মহিলারা একজোট হয়ে আমার উপর আক্রমন করে আমার শরিরের বিভিন্নস্থানে কিল, ঘুশি, লাথি মারতে থাকে এবং আমার শিশু মেয়েটি এগিয়ে এলে তাকেউ ধরে ছুড়ে ফেলে দেয়, এতে আমার শিশুমেয়েটিও মারাক্তক আহত হয়। বেদম মারপিটে আমি যখন অচেনত হয়ে পড়ি তখন তারা আমাকে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এসে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম হিরন বলেন, ওই জমি নিয়ে মনিরুজ্জামান ও আব্দুল লতিফের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। আমরা সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করেছিলোম কিন্তু তারা উভয়পক্ষ কেউ মানেনি। তারপর তারা কোটে মামলা করে। বর্তমানে মামলাটি প্রক্রিয়াধীন আছে। আজ সকাল থেকে দুপুর পযন্ত ইউনিয়ন পরিষদে একটা শালিশে থাকার কারনে এই মারামারি ঘটনা আমি কিছুই জানিনা। মারামারির ঘটনার এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।