ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ইমামকে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার হাফেজ রবিউল ইসলাম (৪৭) নামে এক ইমামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার ভোরে কালীগঞ্জ-কোটচাঁদপুর সড়কের কাশিপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রবিউল এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গীয়ারপোতা গ্রামের ইরাদ আলীর ছেলে। তিনি রাঙ্গীয়ারপোতা মাঝের পাড়া জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন ও কোটচাঁদপুর শহরে ভূষিমালের ব্যবসা করতেন। ফজরের নামাজ আদায় করার পর তিনি ব্যবসার কাজে সাইকেলে করে কোটচাঁদপুরের বাজারে যাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছিনতাইকারীরা তাঁকে হত্যা করেছে। পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলমসাধুর চালক আলী হোসেন জানান, তিনি মাল বোঝাই করে কোটচাঁদপুর থেকে কালীগঞ্জ যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কোটচাঁদপুর শহর থেকে বের হন। কিছু দূর যাওয়ার পর কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার কাশিপুরে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। তিনি জানান, ছিনতাইকারীরা তিনিসহ ১৫ থেকে ১৬টি আলমসাধু, নছিমন ও মিনি ট্রাক দাঁড় করিয়ে ছিনতাই করে। তারা চালকদের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় তিনি রাস্তায় আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়রা জানান,নিহত হাফেজ রবিউল জামায়াতের রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলো। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হরিনাকুন্ডু উপজেলার শাখারিদহ এলাকার নছিমন চালক তরফদার আলীর ভাষ্য, ছিনতাইকারীদের সঙ্গে রবিউলের ধস্তাধস্তি হয়েছিল। রবিউল কিছু নেই জানালে ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেছন থেকে দুই পায়ে কোপ দেয়। এতে তিনি গুরুত্বর আহত হন। ছুরিকাঘাতে আহত রবিউলকে নিজের নছিমনে তুলে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন।
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা ফারহানা শারমিনের ভাষ্য, রবিউল ইসলাম পথেই মারা গেছেন। তাঁরা তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন। নিহতের চাচাতো ভাই রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বর আসাদ জানান, তার ভাই রবিউল ইসলাম কাশিপুর মসজিদে ফজরের নামায শেষে সাইকেল যোগে কোটচাঁদপুর শহরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভূষিমাল আড়তে যাচ্ছিল। পথে কাশিপুর পৌর কলেজের অদূরে ঘন কুয়াশার মধ্যে গাছ কেটে উৎ পেতে থাকা ডাকাতরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে টহল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কোটচাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা জানান , রবিউলকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনই বলা যাবে না। কেন হত্যাকান্ড ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই হত্যা কারীদের সনাক্ত করা সম্ভব হবে। ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মিজানূর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ ও ওসি বিপ্লব কুমার সাহা। তিনি আরো জানান, নছিমন,করিমন ও আলমসাধু সহ অন্য কোনো গাড়িতে ডাকাতি বা ছিনতাই হয়েছে, এমন কোনো অভিযোগ তাঁরা এখনো পাননি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহত রবিউল জামায়াতের কর্মী ছিলেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। স্ত্রী নার্গিস আক্তার ছাড়াও এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন রবিউল। মেয়ে তাসনিয়া আক্তার লিপা কলেজে পড়াশোনা করে এবং ছেলে নাসিম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।