প্রধান মেনু

জাতীয় সমাজসেবা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ১৭ পৌষ (১ জানুয়ারি) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল জাতীয় সমাজসেবা দিবসে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২ জানুয়ারি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৪’ উদ্‌যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমাজ সেবায় গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অসহায়, অনগ্রসর মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য দেশ পুনর্গঠনের শুরুতেই সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদানসহ সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ‘পল্লী মাতৃকেন্দ্র’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। শিশুদের সুরক্ষায় প্রণয়ন করেন শিশু আইন, ১৯৭৪। জাতির পিতা শিশু বিকাশের লক্ষ্যে কেয়ার এন্ড প্রোটেকশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন, বর্তমানে যা সরকারি শিশু পরিবার নামে পরিচিত। প্রতিটি শিশু পরিবারে আমাদের সরকার প্রবীণদের জন্য ১০টি আসন বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন ধরনের ২২৬টি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে দেশের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত শিশু, অনাথ প্রতিবন্ধী, কিশোর-কিশোরী, স্বামী নিগৃহীতা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিবর্গসহ সহায় সম্বলহীন মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে লাগসই ও টেকসই প্রকল্প গ্রহণসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মোট ৫৪টি জনহিতকর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ১ কোটি ১৫ লাখ উপকারভোগীর ভাতা ও অনুদানের টাকা সরাসরি দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে জি-টু-পি পদ্ধতিতে।

আমরা চা-শ্রমিক, হিজড়া, বেদে ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের  লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ, বিশেষ ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করছি। ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগী এমনকি অগ্নিদগ্ধদের জন্য আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে। ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন, ২০১১, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩, পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ, আইন ২০১৩ বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৮ ও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩ প্রণীত হয়েছে। প্রবেশন আইন, স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) ও পরিত্যক্ত শিশু সুরক্ষা আইন ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এ সরকারের অন্যতম কৃতিত্ব। আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সফটওয়্যার চালু করেছি। শিশুদের সহায়তায় চাইল্ড হেল্প লাইন ১০৯৮ (টোল ফ্রি) সেবা চালু করা হয়েছে, যা শিশুর সহায়তায় ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।

জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র (NSSS) ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের সকল সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সামাজিক উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সমাজসেবা অধিদপ্তর বদ্ধপরিকর এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সদা তৎপর থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে অবদান রাখবে।

আমি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”