জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ১২ কার্তিক (২৮ অক্টোবর) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ প্রদান উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২০-২১ প্রদান অনুষ্ঠান ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর জাতীয় রপ্তানি ট্রফিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের সফল রপ্তানিকারকগণকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নে রপ্তানি বাণিজ্যের অবদান অনস্বীকার্য। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রেখে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও সরকার অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যার ইতিবাচক প্রভাব সাধারণ জনগণ পেতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা এদেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে উত্তরণকে সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রপ্তানিখাতের বিকাশে বিভিন্ন প্রকার সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। করোনাজনিত সংকট থেকে পুনরুত্থান শুরু হতে না হতেই অনাকাঙ্ক্ষিত রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদেরকে নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে আমরা কৃচ্ছতাসাধন ও রপ্তানি প্রসারে পদক্ষেপসহ অন্যান্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
রপ্তানি আয় অর্জনে পণ্য ও সেবাখাতের সমন্বয়ে আমরা ইতোমধ্যে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৩ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থির করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার এবং রপ্তানিকারকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সমন্বিতভাবে একযোগে কাজ করতে হবে। পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সেবাখাতের সম্প্রসারণ ও রপ্তানিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, পণ্যখাতের মতো সেবা রপ্তানিতেও আমরা সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারবো।
রপ্তানি বাণিজ্য সামস্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনয়ন করে। রপ্তানি বাণিজ্য একটি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ এবং এ কর্মযজ্ঞে যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে তেমন রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার সাফল্য। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যে সকল প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য সফলতার সাথে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে তাদের স্বীকৃতি প্রদান সরকারের দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।
নিয়মিতভাবে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান কার্যক্রম দেশের রপ্তানিকারকগণকে উৎসাহিত করবে এবং রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
আমি জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২০-২১ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”