প্রধান মেনু

জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী

 প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০১৯ উপলক্ষে নি¤েœাক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশব্যাপী ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০১৯’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম স¦প্ন ছিল সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করা। তিনি ১৯৭২ সালে মহান সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার এবং সব নাগরিকের আইনের আশ্রয় পাওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করেন।

কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। ’৭৫ পরবর্তী বিএনপি-জামাত জোট সরকার হত্যা, দমন, নির্যাতন ও নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে। সুবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়। দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। বর্তমান সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে দেশের কোনো নাগরিক যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছি।

অসহায়, দরিদ্র ও নিঃস¦ জনগণকে বিনা খরচে সরকারি আইন সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসসমূহ ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’র কেন্দ্রস্থল হিসেবে মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে আপোষ-মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করছে, যা সারাদেশের আদালতসমূহে মামলাজট হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা ইতোমধ্যে স¦ল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যেই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে চাই।

এজন্য সমাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। আমরা মানুষের সমৃদ্ধ ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সকল ধরনের ভয়ভীতি ও বৈষম্য দূর করে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি’র অন্যতম লক্ষ্য ‘ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজের সকল ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। আমি ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০১৯’ – এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’

 রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে নিমোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : ‘‘আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উদ্যোগে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০১৯’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারকে অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

অসচ্ছলতা, অজ্ঞতা ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতার কারণে দেশের গরিব-দুঃখী ও সহায় সম্বলহীন জনগণ অনেক ক্ষেত্রে আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। সংবিধানে বর্ণিত ‘আইনের সমান আশ্রয়লাভ’ এর অধিকারকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইনকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করার মাধ্যমে সমাজের হতদরিদ্র ও অসচ্ছল জনগোষ্ঠী বর্তমানে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা পাচ্ছে।

সরকারের এ আইনগত সহায়তা কার্যক্রমে সকলের অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন,টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিচারক, আইনজীবী, এনজিও কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগের ওপর নির্ভর করছে আইনি সহায়তা কার্যক্রমের সফলতা। সমাজে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংশ্লিষ্ট সকলে অবদান রাখবেন – এ প্রত্যাশা করি। আমি ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস – ২০১৯’ পালন সফল হোক – এ কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’