জনপ্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালালে ডেংগুর প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস সম্ভব — স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

ঢাকা, ১৯ শ্রাবণ (৩ জুলাই): স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার্থে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা অপরিসীম। করোনা কালীন সময়ে করোনাকে যে রকম সবাই গুরুত্ব দিয়েছিল এবং ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল তাতে করোনার যুদ্ধে আমরা সফল হয়েছিলাম। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গুর মতো রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধেও আমাদেরকে সেরকম সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।
তিনি আজ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ডেংগু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
মতবিনিময় সভার পূর্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে নগরবাসীদের সচেতন করার লক্ষ্যে এক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ এতে অংশগ্রহণ করেন।
মন্ত্রী এ সময় সমসাময়িক বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে ১২৯ টি দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সারা পৃথিবীতেই এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তবে আসার কথা হল ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব। সেজন্য প্রধান কাজ হচ্ছে এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা। মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ এলাকার জনগণকে সাথে নিয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করতে পারেন।
এ সময় তিনি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বা লার্ভা জন্মানোর মতন উপযুক্ত পরিবেশ আছে এ রকম বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালতকে বড় অংকের জরিমানার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মন্ত্রী বলেন, নানাভাবে সতর্ক করার পরও মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলার মত অসচেতনতাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে মতামত উল্লেখ করে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস না করে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হ্রাস করার সহজ কোনো উপায় নেই, কারণ মশা এমন একটি প্রাণী যা যে কাউকেই কামড়াতে পারে। এ সময় তিনি ডেঙ্গু মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে বিটিআই প্যাকেটের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং তা সাংবাদিকদেরকে দেখান।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে সচেতনতার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেংগু সচেতনতা তৈরিতে কাউন্সিলররা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে মসজিদের ইমাম ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের ডেংগু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান মেয়র।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একেএম শফিকুর রহমান ঢাকা উত্তরে ডেংগু প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উপর সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন। বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।