প্রধান মেনু

ঘূর্ণিঝড় ফণির তান্ডবে  লন্ড-ভন্ড পাইকগাছার শত শত ঘর- বাড়ী বিধ্বস্ত; কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা (খুলনা) ॥ ঘূর্ণিঝড় ফণির তান্ডবে ল-ভ- করে দিয়েছে গোটা পাইকগাছা এলাকা। ঝড়ে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি অথবা প্রাণহানী না ঘটলেও বিধ্বস্ত হয়েছে শত শত ঘর-বাড়ী। উপড়ে গেছে হাজার হাজার গাছ-পালা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বোরো ধান, তরমুজ ও মৌসুমী কৃষি ফসল। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন ইউএনও জুলিয়া সুকায়না। সুপেয় পানি ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতৃবৃন্দ। শনিবার দুপুরের পর আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ী ফিরে গেছেন আশ্রয় নেওয়া মানুষ।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণি শুক্রবার মধ্য রাতে আঘাতহানে উপকূলীয় পাইকগাছায়। রাত ১২টার দিকে ঝড়ের প্রথম ধাক্কা আসে। রাত যত গভীর হয় ঝড়ের গতি ততই বাড়তে থাকে। শনিবার সকালেও ঝড়ের প্রচন্ড গতিবেগ লক্ষ করা যায়। যা দুপুরের পর স্বাভাবিক আবহাওয়ায় রূপ নেওয়ার মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় ফণির সকল শঙ্কা কেটে যায়।

এদিকে ঝড়ের তান্ডবে কোথাও কোন প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও ল-ভ- করে দিয়েছে ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার শত শত মানুষের বসতবাড়ী, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেলুটী ও গড়ইখালী ইউনিয়নের মৌসুমী তরমুজ ফসল সহ পাকা বোরো ধান ও অন্যান্য কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স ম বাবর আলী, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী, ইউএনও জুলিয়া সুকায়না, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, আওয়ামী লীগনেতা জিএম ইকরামুল ইসলাম সহ জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ। দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সুপেয় পানি প্রদান করেছেন বেসরকারি সংস্থা নবলোক।

অনুরূপভাবে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে পাইকগাছা ডায়াবেটিস সমিতির চিকিৎসকরা। আওয়ামী লীগনেতা জিএম ইকরামুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে চাঁদখালী ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামের মৃত কপিল উদ্দীন সরদারের ছেলে হাফিজুল সরদার, মৃত ফজর আলী সরদারের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে মিলি খাতুন, সোহেল উদ্দীন সরদারের ছেলে গফুর সরদার, রাজ্জাক সরদারের ছেলে মনির”ল সরদার ও কালুয়া গ্রামের মৃত মুনছুর আলী সরদারের ছেলে বাহার”ল ইসলাম সহ অসংখ্য মানুষের ঘর-বাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আশুতোষ কুমার মন্ডল জানান, সরল দীঘিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দার টিনের চাল ঝড়ে সম্পূর্ণ উড়ে গেছে।

পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, আলোকদ্বীপ আশ্রয়ণ প্রকল্প সহ পৌর এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স ম বাবর আলী জানান, শুক্রবার রাতভর এলাকার মানুষ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল। সরেজমিন গিয়ে দেখেছি আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে মানুষ ও গবাদী পশু একসাথে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করায় ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাতে কোথাও কোন প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি। আগে থেকেই ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়।

শনিবার সকালে ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি শতভাগ এখনো নির”পণ এখনো সম্ভব হয়নি।  তবে ঝড়ের তান্ডবে এলাকার শত শত মানুষের বসতবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সর্বাত্বক সহযোগিতা করা হবে বলে স্থানীয় প্রশাসনের উর্দ্ধতন এ কর্মকর্তা জানান।