গোদাগাড়ীতে ছেলেধরা সন্দেহে ভিক্ষুক প্রতিবন্ধী নারীকে মারধর

গোদাগাড়ী প্রতিনিধি : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ভিক্ষুক প্রতিবন্ধী নারীকে জনতার গণপিটুনি। আজ সকালে উপজেলার হাটপাড়াতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে এমন গুজবে যখন সারাদেশে টপ অবদাকান্ট্রিতে পরিণত ঠিক সেই সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানসিক প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, পাগলসহ অনেকে ছেলেধরা সন্দেহে জনগণের হাতে মারধরের শিকার হচ্ছেন। আর এমনই একটি মুহুর্তে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকায় শিবা বেওয়া (৫৫) নামের এক নারী মানসিক প্রতিবন্ধীস্থানীয় জনগণের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে গোদাগাড়ী মডেল থানায় নিয়ে আসে।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পবা উপজেলার দামকুড়া গ্রামের শিবা বেওয়া (৫৫) নামের এক মানসিক রোগীকে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার হাটপাড়াতে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর শুরু করে । তার কাছে কিছু ব্যাগ ও খাবার থাকায় সন্দেহ বাড়লে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে। পরে পুলিশ খবর পেলে থানায় উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ওসি আরো জানান, তার ছেলে রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার সোনালী ব্যাংকে চাকরি করেন। তারা পরিবারের কাছে খবর দিলে তার ছেলে ও স্থানীয় ইউপি সদস্য এসে নিয়ে মহিলাকে নিয়ে যায়। ওসি জাহাঙ্গীর আলম তার ছেলের বরাত দিয়ে জানান, শিবা বেওয়া মানসিক ভাবে অনেক দিন হতেই অসুস্থ।
কখন বাড়ি হতে বের হয়ে যায় তার ঠিক থাকে না। এই নিয়ে তার ছেলেও চিন্তায় থাকে। ছেলেধরা গুজবের কবলে পড়ে তার মায়ের মারধরের শিকারে বড়ই চিন্তিত ছেলেরা। গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম এলাকার সকলকে ছেলেধরা গুজবে কান না দেবার অনুরোধ করেছেন। পদ্মাসেতুতে কোন মানুষের মাথা লাগবে না এটা একটি চক্র গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তাই সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন। শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি কম : এদিকে ছেলে ধরা গুজবে গোদাগাড়ী উপজেলা বিভিন্ন স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারেই কমে গেছে।
উপজেলার গোদাগাড়ী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুলতানগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নূরানী কিন্ডারগার্টেন, দারুল উসুয়া, সানরাইজ, শিশু নিকেতন ইত্যাদি সহ সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উদ্যেগজনকহারে কমেছে। যা আর কখনো হয়নি। অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের বাড়ীর বাইরে যেতে দিচ্ছেন না। এতে করে শিশুদের প্রতিভা বিকাশে বিঘ্নতা ঘটছে।