গাজীপুর সিটি নির্বাচন কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন

মোঃ শাহজালাল দেওয়ানঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ভোট গ্রহণ করা হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ১২ এপ্রিল মনোনয়ন যাচাই বাছাই চলবে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্বাচনকে সামনে রেেেখ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এলাকা জুড়ে একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তা হলো কে পাচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এক্ষেত্রে দুজনের নাম রয়েছে আলোচনার একেবারে শীর্ষে।
একজন হচ্ছেন গত নির্বাচন দলের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান এবং অন্যজন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। তারা দুজনই শেষ মুহুর্তে দলের মনোনয়ন পেতে সক্রিয় রয়েছেন। এর বাইরেও আরও দুজন চাইছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। তারা হলেন- মহানগর যুবলীগের আহ্ধসঢ়;বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল এবং মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক সাইফুল ইসলাম। পাঁচ বছর আগেও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির অবাক করা জয়ের আগ পর্যন্ত আলোচনায় ছিল প্রার্থীতা নিয়ে আওয়ামী লীগে নাটকীয়তা।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আজমতউল্লাহকে সমর্থন দিলেও দলের আরেক নেতা জাহাঙ্গীর আলম ভোট করবেন জানিয়ে অটল ছিলেন। পরে হঠাৎ উধাও হয়ে যান জাহাঙ্গীর আর পরে একটি হাসপাতালে সন্ধান মেলে তার। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশের পর জাহাঙ্গীর ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু কাঁদতে কাঁদতে তার এই ঘোষণার কারণে দলের ভেতর তৈরি হয় বিভেদ। যার ফল পরে ভোটে। এদিকে শনিবার (৩১ মার্চ) এই সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা হয়েছে। জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী কর্পোরেশনের প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় ভোট করতে হবে। আইন অনুযায়ী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের দিন গণনা ৮ মার্চ শুরু হয়েছে। এ কারণে কমিশন এ দুটি সিটি কর্পোরেশনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে আবারো আলোচনায় এসেছে পাঁচ বছর আগে আওয়ামী লীগের সেই নাটকীয়তা। এদিকে গত নির্বাচনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়া জাহাঙ্গীর আলম এবার সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে তার সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছেন।
অপরদিকে সভাপতি আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীক পাওয়ার ‘চুড়ান্ত সংকেত’ পেয়েছেন দাবি করে তার সমর্থকরাও এলাকায় মিষ্টি মুখ করিয়েছেন। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন তার সমর্থকরাও। আজমত উল্লাহ খান বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় উন্নয়ন এবং পরিচালনা করার জন্য একজন দক্ষ নগর পিতার প্রয়োজন। এই অভিজ্ঞতা, দক্ষতা আমার পূর্বে রয়েছে যার কারণে দল আমাকেই আগামী নির্বাচনে নমিনেশন দেবে। সময় হলেই আমার সমর্থনের বিষয়ে পজিটিভ কিছু জানতে পারবেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দল আমাকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং আগামী নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও মহল্লায় সামাজিক কর্মকান্ডে শরিক হয়ে আগামী সিটি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করছি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কথা হচ্ছে দল যাকেই মনোনয়ন দিক তার পক্ষে সকলকে কাজ করতে হবে। কোনো ভাবেই দলের মধ্যে কোনো অনৈক্য প্রকাশে আনা যাবে না। গত নির্বাচনে একই কারণে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিলো আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে। তাই এবার আর বিএনপিকে সেই সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, দেখা যাক শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা কার হাতে তুলে দেন নৌকার দায়িত্ব।