গাংনীর মাঠে মাঠে চৈতালী ফসলের সমারোহ

মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃ ভোরের আলোর আলোক রশ্মি মসুর, ভুট্টা, তিল তিষির পাতায় জমে থাকা শিশির কণার উপর পড়ে যেমন অপরুপ শোভার সৃষ্টি করে তেমনি বিকেলের গোধুলী লগ্নে সরিষা ক্ষেত যেন প্রকৃতিকে করে তোলে অপরুপ। এমনি চৈতালী ফসলের সমারোহ দেখা যায় মেহেরপুরের গাংনীর মাঠে মাঠে। গেল বছরের তুলনায় এবার চৈতালী ফসলের আবাদ বেড়েছে বহুলাংশে। ন্যায্য মুল্য পাওয়া আর অনুকুল আবহাওয়ার কারণে চাষিরা চৈতালী আবাদের দিকে ঝুঁকেছে বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিস।গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের হিসেব মতে যে সকল ফসল ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে ঘরে তোলা হয় সে ফসল গুলোকেই চৈতালী ফসল বলা হয়।
চলতি মৌসুমে উপজেলায় বারি ৯, ১৪ ও ১৫ জাতের ১৩৯৫ হেক্টর সরিষা, পাইওনিয়ার, সুপার সাইন, কোহিনুর ও ডন জাতের ১৩৯০ হেক্টর ভুট্টা, বারি ৩, ৪, ৬ ও ৭ জাতের ১২০৩৫ হেক্টর মসূরী, ৫৯ তিল, ৯ একর সুর্যমূখী, ২২১০ হেক্টর পেঁয়াজ ও ৪১২০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করা হয়েছে। যা গেল বছরের তুলনায় দ্বি-গুন।উন্নত জাত আর গেল বছর এসব ফসলের ন্যায্য মুল্য পাওয়ায় চাষিরা এবারও চৈতালী আবাদ করছেন। বিশেষ করে মসুর সরিষা ও ভুট্টাার আবাদ বেড়েছে বেশী।
মসুর চাষি গাংনীর শিমুলতলা গ্রামের লাল্টু জানান, তিনি গত বছর ৬ বিঘা জমিতে বারি- ৬ জাতের মসুর আবাদ করেছিলেন। এবার গম আবাদ না করে তিনি ১১ বিঘা জমিতে মনুর চাষ করছেন। একই কথা জানালেন কামারখালী গ্রামের চাষি ছাদেমান। তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করেছেন। অনুকুল আবহাওয়ার কারণে ফসল বেশ ভাল হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরুপ ফল পাবেন তিনি।
কুতুবপুরের সরিষা চাষি তাজুল ইসলাম জানান, গেল বছরে তিনি ৪ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন। বেশ ভাল লাভবান হওয়ায় এবার ১৩ বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছেন। এ ছাড়াও ৮ বিঘা জমিতে পাইওনিয়ার, সুপার সাইন, কোহিনুর জাতের ভুট্টা চাষ করছেন। এছাড়াও মাঠে মাঠে সরিষা , মসুর, ভুট্টা তিল তিষির পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুন।গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দীন জানান, কাঙ্খিত মুল্য পাওয়ায় চাষিরা আগের তুলনায় চৈতালী আবাদে ঝুঁকেছে।
বিশেষ করে মসুর, ভুট্টা ও সরিষা আবাদ করছেন। তাছাড়া অনুকুল আবহাওয়া আর এবার গম চাষের বদলে চাষিরা অন্যান্য রবি ফসল আবাদ করছেন।