গাংনীর পাট চাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত

মজনুর রহমান আকাশ গাংনী. মেহেরপুর: মেহেরপুরে গাংনীর চাষীরা ন্যায্যমূল্যে পাট বিক্রি করতে পারছেনা। জেলায় পাটক্রয় কেন্দ্র না থাকায় এক শ্রেণীর ফড়িয়া ও মহাজনী পাট ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কম মুল্যে পাট বিক্রি করতে বাধ্য করাচ্ছেন। ফলে পাট চাষীরা ন্যায্যমুল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে লোকসানের মুখে পড়েছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গাংনীতে পাট চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫০০ হেক্টর কম। এর কারণ পাটের ন্যায্যমুল্য না পাওয়া। এবার এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পাট বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকা। জেলায় পাট ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় সরকারের বেঁধে দেওয়া মন প্রতি ১,৯৫০ টাকায় পাট বিক্রি করতে পারছেনা চাষী। চাষীদের আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় প্রতি মন পাট ব্যবসায়ীদের কাছে ১৪-১৫’শ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে মধ্যসত্বভোগীরা লাভের মুখ দেখছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চাষী।
শহড়াবাড়িয়া গ্রামের পাট চাষি জহুরুল হক জানান, তিনি চলতি বছরে ১১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এবার আবহাওয়া অনুকুলে ছিল না। সেচ দিয়ে পাট বড় করতে হয়েছে। আবার বৃষ্টির পানি না থাকায় পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। প্রতি বিঘা পাট জাগ দিতে পুকুর মালিক নিচ্ছে ৫০০ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।চাষীদের দাবী সরকারীভাবে যদি জেলায় পাট ক্রয় কেন্দ্র খোলা হয় তবে চাষীরা লাভবান হবে। একই কথা জানালেন জুগির গোফা গ্রামের পাট চাষি ঠান্ডু মিয়া।
পাট ব্যবসায়ি হুদা পাড়া গ্রামের সিদ্দিক কারিগর জানান, চাষিরা পাট ক্রয় কেন্দ্রে দিতে না পারায় ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করছে। যত্রতত্র পাট জাগ দেয়ায় ও কাদা মাটি দিয়ে পাট পচানোর কারণে পাটের রং নষ্ট হয়ে গেছে ফলে কম দামে মিলারদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে পাট পচানো বন্ধ করলে পাটের রঙ ভাল হবে ও মুল্য পাবেন চাষিরা।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে,এম, শাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, চাষিদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে পাট চাষে। আবার পাট পচানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার পরও চাষিরা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়। এতে পাটের রং কিছুটা নষ্ট হওয়ায় তেমন দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। তবে সরকারী ভাবে ক্রয় কেন্দ্র খোলা হলে চাষিরা আরো মুল্য পেতো।