প্রধান মেনু

গাংনীতে করোনার ছোবল গর্ভবতী নারীরা মহা সংকটে

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনীঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কুঞ্জনগর গ্রামের আজিবুল হকের স্ত্রী রজনী। প্রথম বারের মতো মা হতে চলেছেন। প্রথম মা হবার আনন্দ যেমন রয়েছে তেমনই নানা শঙ্কা রয়েছে মনে। করোনার কারণে কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে পারছেন না তিনি। শুধু বাড়ির আঙ্গিনায় সকাল সন্ধ্যা বিচরণ। করোনায় নিজে আক্রান্ত হতে পারেন আর সেই সাথে অনাগত সন্তানের ভবিষ্যত ভেবে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। শুধু রজনী নয় তার মতো এ উপজেলার কয়েক হাজার গর্ভবতী মা রয়েছেন নানা সংকটে। গাংনী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার নাসিমা খাতুন জানান, এ উপজেলায় গর্ভবতী মায়ের সংখ্যা ২ হাজার ১০৭ জন।

এদের মধ্যে ১শ’ ১৭ জন নয় মাসের গর্ভবতী যাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিক্ষা অতি জরুরি। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে তারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে পারছেন না। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালালেও তা উপেক্ষিত। জনগন কেউ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না। উপরন্ত মাস্ক ব্যবহার একটা ফ্যাসনে পরিনত হয়ে গেছে। অনেকেই মাস্ক মুখে ব্যবহার না করে গলায় ঝুলিয়ে রাখছে। ফলে করোনা সংক্রমন আশঙ্কা শতভাগ। গাংনী রাজা ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের গর্ভবতী রোজিনা বেগম জানান, চলতি মাসের ২১ তারিখ তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন।

সরকারি হাসপাতালে কোন স্বাস্থ্য সচেতনতা না থাকায় তিনি ক্লিনিকে এসেছেন। এখানে কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। অনকেই কাছা কাছি বসে খোশ গল্পে মেতে উঠেছেন। রাজা ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা জানান , এলাকার ৬০ ভাগ লোক অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত। তারা সামাজিক দূরত্ব কি সেটা জানে না। আবার মাস্ক ব্যবহার করতে নারাজ। অনেকেই যারা ধর্মান্ধ তারা বলছেন, রোগবালাই খোদা প্রদত্ত। বিধায় মানুষ প্রদত্ত সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহার প্রয়োজন নেই।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাদিয়া সুলতানা জানান, গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে সহজেই তারা স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে। গ্রামের সহজ সরল মানুষ স্বাস্থ্য সচেতনতা , সামাজিক দূরত্ব এটা জানে না। তার পরও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।