প্রধান মেনু

গাংনীতে আমনের বাম্পার ফলন দাম নিয়ে চাষিরা হতাশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, গাংনীঃ গাংনীর কৃষকের চঞ্চল চোখ এখন রোমাঞ্চকর ধান কাটার দিকে। মাঠে মাঠে পাঁকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। এ অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক পরিশ্রম করে ক্ষেতের পর ক্ষেত ফসল ফলিয়েছে। পুরোদমে শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াই। চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য মূল্য নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। ব্যবসায়িরা বলছেন, ভারত থেকে চাল আমদানী করার কারণে দেশীয় ভাবে প্রস্তুতকৃত চাল বিক্রি করতে না পারায় মিল মালিকরা ধান কিনতে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, দাম না পেলে কৃষকরা আমন আবাদে উৎসাহ হারাবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর। শুধু লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নয়, ধানের বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে এখন হাসির ঝর্ণা। এখন ব্রি-২৮, ৬১ ও স্বর্ণা জাতের ধান কাটা মাড়াই চলছে। তবে কৃষকরা ধানের দাম নিয়ে বেশ উদ্দিগ্ন। এনজিও সমিতির ঋণ করে আবার কেউ কেউ মহাজন ও ফড়িয়াদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে জমি চাষ করেছেন। কিন্তু বাজারে ধানের মূল্য না পাওয়ায় চিন্তিত। কিভাবে মহাজন ও ফড়িয়াদের পাওনা পরিশোধ করবে তা নিয়ে ভেবে আকুল।

বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, রোপা আমন প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে- ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায়। গেল বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গেল বছর প্রতিমণ ধান বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা। গাংনীর রায়পুর গ্রামের চাষি মকলেছুর রহমান জানান, তিনি এ মৌসুমে ৩৩ বিঘা জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে বিঘা প্রতি ৮ হাজার টাকা। এ আবাদ করে বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ২০ মণ ধান পেতে পারেন বলে ধারণা করছেন। তিনি আরো জানান, ধানের উৎপাদন খরচ উঠলেও তেমন লাভবান হবেন না তিনি। শিমুলতলার কৃষক মনিরুল জানান, তিনি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছেন।

এতে তার ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার টাকা। এ আবাদ করে তিনি ৪৫ মণ ধান পাবেন বলে আশাবাদী। ধানের ন্যয্য দাম না পেলে তিনি চলতি রবি আবাদ করতে পারবেন না বলেও জানান। গাংনীর স্বদেশ সীড্ধসঢ়;স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদুল হক মানিক জানান, কৃষকরা আমনের কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে বীজ ব্যবসাতেও। আগামী বোরো মৌসুমে অনেকেই ধান চাষ করতে চাচ্ছেন না। আবার যারা ২০ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতেন যারা ১০/১২ বিঘা আবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক চাষি বোরো আবাদের জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন। চাষিরা ধান চাষ কমিয়ে দিলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাব উদ্দীন জানান, প্রশিক্ষণ ও কৃষি প্রণোদনা প্রদান করায় কৃষকরা আমন আবাদে আগ্রহী হয়ে পড়ে। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করায় উৎপাদনও ভাল। সরকারী ভাবে ধান ক্রয়ের সময় ব্যবসায়িদের কাছ থেকে না কিনে চাষিদের কাছ থেকে কিনলে চাষিরা লাভবান হবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মজনুর রহমান আকাশ