গণমাধ্যমের বিদ্যমান ধারা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে —মোস্তাফা জব্বার

ঢাকা, ১৮ বৈশাখ (১ মে) : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তরের ধারাবাহিকতায় প্রচলিত গণমাধ্যমের বিদ্যমান ধারা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্রমবিকাশে আগামী দিনগুলোতে কাগজের পত্রিকা থেকে তথ্য খুঁজে নেওয়ার অবস্থাও বিরাজ করবে না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই প্রতিমূহুর্তে সংবাদ আপডেটের প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই পাঠকের কাছে অপরিহার্য হয়ে উঠছে। এক সময়কার অডিও, প্রিন্ট ও টিভিভিত্তিক গণমাধ্যম এখন ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তার লাভ করছে। আর এই অবস্থা কেবল সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যই নয়, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি-ঢাকা আয়োজিত বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রয়াত স্মরণীয় বরণীয় সাংবাদিক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি-ঢাকা’র সভাপতি মোল্লা জালাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, এমপি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান, সাবেক সিনিয়র সচিব আবদুস সামাদ, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কুদ্দুস আফ্রাদ, সাংবাদিক ফায়জুস সালেহীন, ইউসুফ শরীফ প্রমুখ ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্বাধীনতার পর সাংবাদিকতার রূপান্তর ঘটেছে উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের সম্মান করতেন। তিনি দেশে সাংবাদিকতার বিকাশে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সাংবাদিকদের মধ্যে মত ও পথের ভিন্নতা থাকলেও সাংবাদিকতার স্বার্থে সবাই ছিলেন আপসহীন। অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফা জব্বার বলেন, স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আমি যখন সাংবাদিকতা শুরু করি তখন ৫ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা ছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবে তরুণ সাংবাদিকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিলো। আমরা সেই নিয়ম পরিবর্তনে বাধ্য করি এবং নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি করে তরুণ সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে প্রবেশাধিকার প্রদানে সমর্থ হই।
মন্ত্রী বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহের মাটিই কেবল উর্বর নয়, সাংবাদিকতা, শিল্প সাহিত্যে এই অঞ্চলের মানুষের অবদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কাদা মাটি মেখে রাজধানীতে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন শেষে আমি নিজেও এই জাতির জন্য কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পেরে বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহের মানুষ হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করছি। মন্ত্রী সাংবাদিক হিসেবে প্রয়াত আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, মুজীবুর রহমান খাঁ, খোন্দকার আবদুল হামিদ, সৈয়দ নুরুদ্দীন, হাসান হাফিজুর রহমান, মীর নুরুল ইসলাম, আতাউস সামাদ, রাহাত খান, আসাফ উদ্দৌলা, বজলুর রহমান, ফকির আশরাফ, রফিক আজাদ, শফিউল হক প্রমুখের অবদান তুলে ধরেন। তিনি নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের নিজেদের প্রতিভার বিকাশে তাদের জীবনী ও লেখনী অধ্যয়ন করার আহ্বান জানান। তিনি প্রয়াত সাংবাদিকদের ন্যায় ঐ অঞ্চলের জীবিত সাংবাদিকদের জীবনী সমন্বিত করে একটি বিশেষ প্রকাশনা তৈরির জন্যও আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সাংবাদিকদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। এ অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছেন আবুল মনসুর আহমদ, হাসান হাফিজুর রহমান, রাহাত খান, রফিক আজাদ এর মতো দেশবরেণ্য সাংবাদিকগণ। সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতা ও সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান যুগ প্রচার-প্রসারের যুগ। আর এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন সাংবাদিকগণ। প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, সাংবাদিকগণ মূল ধারার সংবাদের পাশাপাশি দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির সংবাদও গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করবেন।
পরে কেক কেটে ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠার ২৩৬তম বার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়।