ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় — মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

ঢাকা, ২৯ শ্রাবণ (১৩ আগস্ট) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।”
আজ রাজধানীর রমনাস্থ মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২০ উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন : আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য বার বার ষড়যন্ত্র করা হয়। ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু জানতে পারেন তাকে হত্যার জন্য পাকিস্তান থেকে আততায়ী পাঠানো হয়েছে। ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিলো। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী ক্যাম্পে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো। ১৯৭২ সালের ১৩ জুলাই মেজর ফারুক ও ১৯৭৩ সালের ১১ জুলাই কর্নেল রশিদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে অস্ত্র কিনতে চেয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালের ১৩ মে উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তাদের নির্দেশে কর্নেল ফারুক শেখ মুজিব সরকারকে উৎখাতের জন্য আমেরিকার সাহায্য চেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ আর্মড রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড ফারুক রহমান জিয়াউর রহমানকে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে বলেছিলেন। জিয়াউর রহমান তাতে রাজি না হলেও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেননি। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াবহ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।”
শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো সুখী, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তিনি সূচনা করে দিয়েছিলেন। আর সেটাকে বাস্তবায়ন করছেন তাঁর রক্তের এবং আদর্শের উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। তিনি গোটা জাতিকে বুকে ধারণ করেন। বর্তমানে বিশ্ব নেতৃত্ব বলছেন আধুনিক বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, ত্রিশ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের মাঝে আছেন।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবদুল জব্বার শিকদার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার প্রমুখ। সভার পূর্বে মৎস্য অধিদপ্তরে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, সচিবসহ অন্যরা। সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং সভা শেষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।