প্রধান মেনু

কুড়িগ্রামের সাথে রৌমারী- রাজিবপুরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের দাবী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ  কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের দাবী ক্রমন্বয়ে উজ্জিবিত হচ্ছে।অঙ্গাত কারনে স্থগিত হওয়া এলজিইডির নেয়া ২০০৫ সালে যুগান্তকারী পদক্ষেপটি বাস্তবায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে।প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উপজেলা দুটিতে বর্তমানে যাতায়াতে ১২ ঘন্টার স্থলে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় ব্যয় হবে। একদিকে যেমন সময়ের সাশ্রয় হবে অন্য দিকে এ উপজেলা দুটির মানুষের দীর্ঘদিনের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের লাঘব হবে।

যা ঐ অঞ্চলের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো মনে হবে। কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে উলিপুর-উপজেলা হয়ে ২৯ কিঃ মিঃ পথ বিভিন্ন যানবাহন চেপে চিলমারী উপজেলায় যেতে হয়। চিলমারী থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার বালু পথ হেটে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যেয়ে নৌকায় চেপে ১৮ কিঃ মিঃ নদী পথ পাড়ি দিয়ে পরবর্তী প্রায় ৭ কিঃ মিঃ বালু চর পায়ে হেটে রৌমারী সদর পৌছাতে হচ্ছে। সেখান থেকে আবার রাজিবপুর যেতে হয় আরো ২৬ কিঃ মিঃ। এ সকল পথ পাড়ি দিতে পথচারীকে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগান্তি সহ ঝুকিপূর্ণ (নৌকায় চেপে) নদী পথ পাড়ি দিতে হয়।

বিশেষ করে মালামাল পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিনিয়তই। এ উপজেলা ২টি যে সমস্ত সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের অফিসার কর্মচারী নিয়োগ করা হয় তারা অনেকেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। এর ফলে উপজেলা ২টির উন্নয়ন কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। উপজেলা ২টি বর্তমানে সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পানিশমেন্ট ট্রান্সফার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধু তাই নয় এ উপজেলা ২টির মানুষের সাথে কেউই আতœীয়তা করার আগ্রহ দেখায় না।

তাদের জীবন যাত্রা অন্য অঞ্চলের মানুষের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ইতিপূর্বে বহু আবেদন নিবেদন জানানো হলেও কেউ তেমন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।২০০৫কুড়িগ্রাম এলজিইডির তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাহ উদ্দিন রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক ব্যবস্থা স্থাপনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করেন। তিনি রৌমারী যাবার বিভিন্ন পথ বেশ কয়েকবার সরেজমিন পরিদর্শন করেন। সর্বশেষ তিনি কুড়িগ্রামের সাথে যাত্রাপুর হয়ে সরাসরি রৌমারী-রাজিবপুরের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের পরিকল্পনা নেন।

তখন মাত্র সড়ক নির্মাণের জন্য ২২ (বাইশ) টি প্যাকেজ মোট সতের কোটি একানব্বই লক্ষ সাতাশ হাজার আটশত ছয়চল্লিশ টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব প্রেরণ করে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তিতে তা আর কোন আলোর মুখ দেখেনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে কুড়িগ্রাম থেকে যাত্রাপুর সড়ক ইতিমধ্যে পাকাকরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে মোল্লারহাট ৪ কিঃ মিঃ কাঁচা রাস্তা পাকা করলেই নদী পথে ৪ কিঃ মিঃ পরেই রৌমারীর খেয়াঘাট।

খেয়াঘাট থেকে ৩ কিঃ মিঃ পেরোলেই রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা যা কাঁচা রাস্তা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দাঁতভাঙ্গা থেকে সাড়ে ৫ কিঃ মিঃ রাস্তা পাকা করলেই রৌমারী সদর। খেয়াঘাটে ফেরি সার্ভিস চালু করলেই যাতায়াত মাত্র দেড় থেকে ২ ঘন্টায় যানবাহন চলাচল সহ সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব। রৌমারীর বিশিষ্ট সমাজ সেবক আবু হানিফ মাষ্টার জানান, প্রতিদিন শতশত মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে নদী পথে যাতায়াত করেন। বিকাল ৪.৩০টার পর কোন নৌকা না চলায় চরমভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীসাধারনের।

রৌমারী- কুড়িগ্রাম সংযোগ সড়ক এই দু’উপজেলার মানুষের দ্বীর্ঘ দিনের প্রানের দাবী। রৌমারী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুজাউল ইসলাম বলেন, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গার সালুর মোড় হইতে সাহেবের আলগা নৌকা ঘাট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার ও কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর থেকে মোল্লার হাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণ করে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেরীর ব্যবস্থা করলেই রৌমারী ও রাজিবপুরের মানুষ খুব সহজে এবং অল্প সময়ে কুড়িগ্রাম ২৪ ঘন্টাই চলাচল করতে পারবে।

তা ছাড়াও এই রাস্তাটি চালু হলে কুড়িগ্রাম ও লালমনির হাট জেলার দুরপাল্লার গাড়ি এই রাস্তায় চলতে পারবে। একদিকে যেমন সময় কম লাগবে অন্য দিকে জ্বালানি খরচও অনেকাংশে কম হবে। সেই সাথে রংপুর ঢাকা সড়কে যানজট অনেকটা কমে আসবে। রৌমারীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল হাই জানান এই সড়কটি চালু হলে রৌমারী রাজিবপুর উপজেলার ৫ লাখ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।

ব্যবসা বানিঞ্জ্যের ব্যপক প্রসার ঘটবে সেই সাথে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবী দ্রুত এই রাস্তটির নির্মানে পদক্ষেপ গ্রহন করা হউক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম এর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ জানান, ইতি পুর্বে এ রখম কোন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল কিনা আমি জানিনা।তবে উচ্চ র্পযায় থেকে নির্দেশনা আসলে অবশ্যই এল জি ই ডি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।