কুষ্টিয়া গড়াই নদীতে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী,খোকসা উপজেলার গড়াই নদীর মাটি ও বালি প্রতিদিন প্রকাশ্য দিবালোকে হরিলুট হয়ে যাচ্ছে। আর মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। স্থানীয় একটি চক্র এর সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। জানা গেছে, জিলাপীতলা মোড়ের পাশের কাঁচ দিয়ে ঘেরা অফিসে বসে এই মাটি ও বালির কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে এলাকার দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি। গড়াই নদীর গ্রামরক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, কথা বলতেও ভয় লাগে।
এখানে ছদ্মবেশে ওদের লোক ঘোরাফেরা করে। গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশ থেকে গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের মতো অনেকেরই জমি আছে এখানে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও কারো কিছুই করার নেই। ওরা জমির চারপাশ থেকে মাটি কেটে গভীর করে নেয়, ফলে আমাদের জমিতে আর চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়েই নামেমাত্র টাকায় ওদের কাছে মাটি বিক্রি করে দিতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামরক্ষা বাঁধের অদুরে একটি বাঁশ বাগান ও ছোট্ট একটি পানের বরজের চারপাশ থেকে মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। এর একটু দূরে উত্তর-দক্ষিণ লম্বা ভিটা জমিতে কলার বাগান ও পাশেই ফলদ ও বনজ গাছ থাকাবস্থায় ওই জমির পাশের জমির গা ঘেঁষে খননযন্ত্রের (এক্সকাভেটর) সাহায্যে গভীর করে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা গ্রামরক্ষা বাঁধের অদুরের এই উঁচু জমির মাটি কেটে নেয়া হলে বর্ষা মৌসুমে গ্রামরক্ষা বাঁধ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ বাস্তবায়ণ সংস্থার অর্থায়নে নদীর তীরে নির্মিত হিজলাকর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো হুমকীর মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় এক নারী বলেন, গত বছর গড়াই নদী খননের সময় গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশদিয়ে বালির স্তুপ তৈরী করা হয়েছিল। ফলে এই এলাকার মানুষ ভাঙ্গনের ঝুঁকিমুক্ত হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই প্রভাবশালীরা ওই স্তুপ থেকে বালি বিক্রি করতে শুরু করে। তবে এবারো নদী খননের সময় গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশদিয়ে বালি ফেলা হয়েছে।
সদকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, নদী তীরের জমির মাটি কেটে ইটভাটার মালিকদের নিকট বিক্রি করে দিচ্ছে। আর প্রকাশ্যে হরিলুট হচ্ছে বালি। কিন্তু সরকার প্রতিদিন মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই মাটি ও বালির গাড়ি চলাচল করায় সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং ধুলো উড়ে এলাকার মানুষের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, বালি উত্তোলনের জন্য কাউকে অনুমোতি দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।