প্রধান মেনু

কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্র মুতাসসিম বিন মাজেদ ওরফে হৃদয় (১৪) হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

মোঃ আকরাম হোসেন,রিপোর্টার কুষ্টিয়াঃ বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল) বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি জানিয়েছেন কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আকরাম হোসেন দুলাল।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো— শহরের কালিশংকরপুর এলাকার গাফফার খানের ছেলে সাব্বির খান, হাউজিং-এ ব্লকের আজম আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন ড্যানী ও ভেড়ামারা উপজেলার দশমাইল ক্যানেল পাড়ার মৃত মসলেম শেখের ছেলে আব্দুর রহিম শেখ ওরফে ইপিয়ার। রায় ঘোষণার সময় প্রধান আসামি সাব্বির খান আদালতে উপস্থিত ছিল। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়া পূর্বপাড়া এলাকা থেকে জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হৃদয়কে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর অপহরণকারীরা হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুনের কাছে মোবাইল ফোনে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে অনেক দেন-দরবার শেষে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে হৃদয়কে ছেড়ে দিতে রাজি হয় অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের কথামত গত ২ জুন গোপনে তাদের ২ লাখ টাকা দেয় হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুন।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, অপহরণকারীদের টাকা দেওয়া হলেও তারা হৃদয়কে ফেরত দেয় না। পরে হৃদয়ের মা বাদী হয়ে কুষ্টিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৮ ধারায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের তথ্যানুযায়ী ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া হাউজিং এলাকা থেকে অপহরণকারী হেলাল উদ্দীন ওরফে ড্যানীকে (২২) গ্রেফতার করে পুলিশ।
এরপর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হৃদয়কে অপহরণের কথা স্বীকার করে ড্যানী। সে জানায়, আব্দুর রহিমের মাধ্যমে হৃদয়কে অপহরণের পর হত্যা করে ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের দশমাইল এলাকায় মিজানুর রহমানের জমিতে লাশ পুতে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে হৃদয়ের গলিত লাশ উদ্ধার করে।
পিপি আকরাম হোসেন দুলাল জানান, পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি নিয়েছে আদালত। এতে সন্দেহাতীতভাবে আসামিদের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।