কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের রিফাইতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির অভিযোগ।

এম এ শাহিন কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১২ সালে নিয়োগ দেখানো হলেও ৬ বছর পর চলতি বছরে এমপিওর জন্য আবেদন করার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। ফলে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, রিফাইতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সর্বশেষ ১৫ এপ্রিল ২০১২ সালে সোহেল রানা নামে একজন কৃষি শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ঐ বছর তিনি এমপিওভুক্ত হন। এরপর ঐ একই সময়ে আরো ৩ জনকে সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষক নিয়োগ দেখিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা হাতিতে নিয়েছে স্কুল কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।সম্প্রতি দৌলতপুর আসনের স্বতন্ত্র এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ভাই বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী প্রভাব খাটিয়ে ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন।
এরপর ঐ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহমুদ খানের সহযোগীতায় জনপ্রতি ১০-১৩ লাখ টাকার বিনিময়ে বিলকিসকে ধর্মীয় শিক্ষক, মোঃ সাইফ সাহরিয়ারকে সহকারী শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহমুদ খানের ছোট বোন শাফিনাজ মাহমুদকে সহকারী শিক্ষক হিসাবে ২০১২ সালের এপ্রিল ও মে মাসে নিয়োগ দেখানো হয়েছে। চলতি বছর তারা এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অভিযোগে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যন হারেজ উদ্দিন ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মোজাম্মেল হক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। তাদের স্বাক্ষর জাল করে ঐ তিন শিক্ষককের নিয়োগ দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে তৎকালীন সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যন হারেজ উদ্দিন জানান, তার কাছে ঐ তিনজনের নিয়োগের বিষয়ে লোক এসেছিল। কিন্তু তিনি কোনো ধরনের অনিয়ম করতে রাজি হননি বলে জানিয়েছেন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান, তিনি চাকরী থেকে ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। অবসরের পরে একটি মহল তার কাছে ঐ তিন শিক্ষকের নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করার জন্য প্রস্তাব দিলে তিনি তা নাকচ করে দেন বলে জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান সভাপতি এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ভাই বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহমুদ খান যোগসাজস করে তৎকালীন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ ও এমপিওর কাগজপত্র তৈরি করেছেন।
এ ব্যাপারে বর্তমান সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহমুদ খানের কাছে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না বলে স্বাক্ষাতে কথা বলার জন্য বলেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হকের নিকট জানতে তিনি জানান, টোকন চৌধুরী নির্দেশে আমি এমপিওর তালিকা পাঠিয়েছি। ২০১২ সালের নিয়োগ আর এমপিওর আবেদন ২০১৮ সালে কেন? জানতে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোঝেন তো ভাই, টোকন চৌধুরী বললে এমন কাজ না করে কি করব।