কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এম এ শাহিন কুমারখালী কুষ্টিয়াঃ ডায়াবেটিস প্রতিটি পরিবারের উদ্বেগ” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আজ ১৪ নভেম্বর কুমারখালীতে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাঃ মোঃ আকুল উদ্দিন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজীবুল ইসলাম খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং আলোচক ছিলেন ডাঃ মানা শায়ন্তা ঘোষ, মেডিকেল অফিসার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ডায়াবেটিস – যা বাংলাতে বহুমূত্র রোগ নামে পরিচিত তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। ডায়াবেটিসের জন্য দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা , আর এই রোগটি অন্যান্য রোগ থেকে ভিন্ন ধরনের –
কেন এই ভিন্নতা? খেয়াল করে দেখুন আগের বেশির ভাগ রোগই হত কোন না কোন organism দ্বারা আক্রমনের জন্য। ফলে, এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল কিংবা এন্টি ফাংগাল ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেত। কিন্তু, ডায়াবেটিসের জন্য এমন কোন Organism নেই, বরং বলা হয়, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, কায়িক শ্রম কমে যাওয়া, দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া – সব মিলিয়ে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস প্রধানত ২ ধরনের –
১) টাইপ ১ ডায়াবেটিস – (Insulin Dependent Diabetes , Juvenile Diabetes) নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারনত ছোট বয়সেই দেখা দেয় এবং প্রত্যহ ইনসুলিন গ্রহন ব্যাতিরেকে এর কোন চিকিৎসা নেই। (যত দিন বেঁচে থাকবে, ইনসুলিন নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে)
২) টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Insulin Non Dependent Diabetes, Adult Onset Diabetes) টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলতে ই আমরা সাধারনত ডায়াবেটিসকে বুঝাই, যার সূচনা ঘটে ৪০ বছর পরবর্তি সময়ে। এবং এই ডায়াবেটিস ই বংশ পরম্পরায় ছড়িয়ে পড়ে।
এর চিকিৎসার জন্য রয়েছে নানা ধরনের ঔষধ, যার ভেতর রয়েছে Oral Hypoglysemic Agents – Metformin, Glipizide, Repaglinide etc এই ঔষধ গুলো মুখে খাওয়ার জন্য, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ি খেতে হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর আরেকটি ঔষধ হচ্ছে INSULIN – যখন উপরোক্ত ঔষধ গুলো আর কাজ করে না কিংবা liver diseases অথবা Surgery এর সময় এ Insulin দেয়া হয়। আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস এ সব সময় রোগীকে বলা হয় প্রত্যহ ব্যায়াম করার জন্য।
প্রশ্ন করা যেতে পারে কতটুকু ব্যায়াম ?? সবার শারীরীক ক্ষমতা তো আর সমান নয়, তাই, ব্যায়াম ও সবার সমান নয়, তবে যেই পরিমান ব্যায়াম করলে বুক ধড়ফড় করবে ততটুকু ব্যায়াম করা যেতে পারে – তার অধিক নয়।
উপসর্গঃ
সাধারনত ডায়াবেটিসের উপসর্গ খুব ভালো বুঝা যায় না, একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, ডায়াবেটিস হওয়ার বেশ পরেই আমরা জানতে পারি, যখন চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি রোগীকে রক্তে শর্করা পরীক্ষার জন্য বলেন। তারপর ও কিছু উপসর্গ রয়েছে– প্রশ্রাবের পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া,পানির পিপাসা বৃদ্ধি পাওয়া,ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া,দূর্বলতা বৃদ্ধি পাওয়া,মানসিক সহ্য শক্তি কমে যাওয়া,ক্ষত সারতে অতিরিক্ত সময় নেয়া।
প্রতিটা সচেতন মানুষের ৪০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানো উচিত(বছরে ১ বার হলেও)। Hyperglycemia – সহজ ভাষায় বললে, রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে বৃদ্ধি পাওয়া। Hypoglycemia – রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে কমে যাওয়া।
এই দুটি নাম ডায়াবেটিস এর সাথে অত্যন্ত ভাবে জড়িত – ডায়াবেটিস হয় রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে বৃদ্ধি পাওয়ার কারনেই। রক্তে গ্লুকোজের পরিমান 5.5-7.8 mmol/L এর ভিতর থাকাটা স্বাভাবিক। যখন তা বেড়ে যায় তখনি ডায়াবেটিস হয়।