কালিয়াকৈর(গাজীপুর) প্রতিনিধি ঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পাবুরিয়াচালা এলাকায় একটি অবৈধ করাতকলে (স’মিল) এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে করাতকলের মালিক-শ্রমিক ও কাঠ ব্যবসায়ী পলাতক রয়েছে। নিহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার পাবুরিয়াচালা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৬)। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার পাবুরিয়াচালা এলাকার কালু মিয়া অবৈধভাবে একটি করাতকল নির্মাল করেন। ওই করাতকলটি গত ছয় মাস আগে বনবিভাগ ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদও করা হয়েছিল। স্থানীয় বন অফিসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ফের অবৈধ ওই করাতকলটি চালু করা হয়। ওই করাতকলে বৃহস্পতিবার সকালে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন একটি বাগান গাছের নিচ থেকে মাথা থেথলে যাওয়া অবস্থা তার লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনার পর থেকে ওই করাতকলের মালিক কালু মিয়া ও তার শ্রমিকরা এবং স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী পলাতক রয়েছে। পরে স্থানীয় মাতাব্বর, কাঠ ব্যবসায়ী ও করাতকলের মালিক বিষয়টি ধামাপাচা দেওয়া চেষ্টা চালান। এ সময় ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে তারা নিহতের মা-বাবা ও স্ত্রীর স্বাক্ষরও নেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতে লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

এদিকে ওই ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় কাচিঘাটা রেঞ্জের কাচিঘাটা বিট অফিসের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অবৈধ করাতকলের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এদিকে একমাত্র উর্পাজনক্ষমকে হারিয়ে নিঃস্ব মা-স্ত্রী। তাদের ও আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে এলাকা ভারী হয়ে উঠে। নিহতের স্ত্রী নিশি আক্তার বলেন, দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।

আভির হোসেন নামে ছয় মাসের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তিনি মারা যাবার পর আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। কাচিঘাটা ফরেষ্ট অফিসের বিট কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল জানান, ওই করাতকলে একজন মারা গেছে। তবে এটি বৈধ না অবৈধ কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিনহাজ উদ্দিন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।