প্রধান মেনু

কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে পালিত হলো বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস

কলকাতা (ভারত), ১৫ আগস্ট : বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আবেগ। বঙ্গবন্ধুর ঐন্দ্রজালিক আহ্বানে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি সৃষ্টি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই এগিয়ে চলছেন তাঁর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। এ জন্যই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এসব বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধায়।

বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ‘বাংলাদেশ গ্যালারি’তে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধায়, সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অগ্নি নির্বাপন ও জরুরি পরিষেবা দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুজিত বোস । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক মানস ঘোষ এবং বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শুভরঞ্জন দাসগুপ্ত। উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান

স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর একটি জীবনভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা সভায় উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান স্বাগত বক্তব্যে বলেন,  বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বাংলার মাটি হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা এবং সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল্যবোধ মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু হলেও তাঁর মূল্যবোধ, নীতি ও আদর্শের মৃত্যু হয়নি। বরং তাঁর আদর্শ গ্রথিত রয়েছে বাংলা জনগণের হৃদয়ে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো- কোটি বাঙালির হৃদয়ে চিরঅমলিন, চিরঅক্ষয় হয়ে থাকবে।

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম মিশন কলকাতার ৯, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণিতে অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন চত্বরে সকালে শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে এ উপ-হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) মোঃ বশির উদ্দিন, প্রথম সচিব (প্রেস) ড. মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) সানজিদা জেসমিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মহালগ্নে এ বছরের জাতীয় শোক দিবসে মিশন চত্বরে উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান ক্যাসিয়া নডোসা বা পিঙ্ক শাওয়ার জাতের একটি বৃক্ষ রোপণ করেন। উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবন প্রাঙ্গণে ২০১৮ সালে অনুরূপ একটি বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল, যেটি বড়ো হলে গোলাপী ফুলে ছেয়ে যাবে। এরপর মিশনের মসজিদে বাদ যোহর মিলাদ মাহফিল শেষে দুস্থ ও অনাথ শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

এর আগে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষে’ স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র হিসেবে ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে ৮, স্মিথ লেনের বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। পরে ১৯৪৬ সালে বঙ্গবন্ধু ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।

শেষে প্রধান অতিথি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়  উপ-হাইকমিশনের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ পরিদর্শন করেন।

মাস্ক পরিধান করে এবং যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।