প্রধান মেনু

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুত ঝিনাইদহের কর্তৃপক্ষ

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহে বর্তমান সময়ের সবথেকে আলোচিত বিষয় হচ্ছে করোনা ভাইরাস। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জেলাবাসী।পাশাপাশি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এবং এই মহামারি ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে এবং প্রতিরোধে ঝিনাইদহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের করণীয় বিষয়ে ইতোমধ্যে দফায় দফায় জরুরি বৈঠক করেছেন।জেলা থেকে উপজেলাস্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সে প্রশাসন সর্বত্র তৎপর এবং জেলা সদরে কোয়ারেন্টাইন স্থান নির্ধারণ আছে। এদিকে ইতালী ফেরত এক দম্পত্তি নিয়ে শহরে রীতিমতো হৈচৈ কান্ড ঘটে যায়।জেলা সদরে মহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে আরাপপুরের মাষ্টার পাড়ায় এক দম্পত্তি মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

অন্যদিকে শহরের হামদহ খোন্দকার পাড়ার এক কাস্টম কর্মকর্তার ছেলেও বাড়ি ফিরে শহরে চলাফেরা করে বেড়াচ্ছেন খবরে শহর দ্রুত মানবশুন্য হতে থাকে। ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগ খবর পেয়ে তাদের বাড়ি গিয়ে তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা সিন্ধান্তের কথা জানান। তবে তাদের কাছে ইতালি স্বাস্থ্য বিভাগের হেলথ কার্ড আছে। তারা করোনা ভাইরাস মুক্ত বলে ইতালী স্বাস্থ্য বিভাগ সনদ দিয়েছে। জেলার অর্থবিত্তের মালিকেরা কাজ না থাকলে শহরে বের হচ্ছে না,অন্যদিকে দিনমজুর-খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজের সন্ধানে প্রতিনিয়ত ঘরের বাইরে অবস্থান করছেন। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলাজুড়ে মসজিদে মসজিদে ও পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ মঙ্গলবার করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরী সভা করেছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা,  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আরিফ উজ জামান, ডাঃ প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থসহ প্রশাসনিক, প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে কোন আতংকিত না হয়ে সচেতনতার মাধ্যমে আমরা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ব্যাপক আকারে ছড়ায়নি, মাত্র তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই ভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যদি এই রোগ দেখা দেয় তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রাখার জন্য কোয়ারেন্টাইন হিসেবে চারটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে সরকারি ওরাল স্যালাইন ফ্যাক্টরি, মূক ও বধির আবাসিক স্কুল, ২৫ শয্যার শিশু হাসপাতাল ও বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এছাড়াও লাউদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে প্রস্তাবনায় রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন আরো বলেন,যারা বিদেশ থেকে আসবেন তাদেরকে নিজ বাসায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন এবং লক্ষন দেখা গেলেই কেবল স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকদের তত্বাবধানে রোগীদের নেওয়া হবে। তবে এটা নিজেদের বাসাতে করলেই রোগাক্রান্তদের জন্য ভাল হবে বলে তিনি জানান।

তিনি ইতালী ফেরত ওই দম্পত্তির খবর শোনা মাত্রই তাদের বাড়ি স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়ে দেন বলে জানান। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, করোনা মোকাবিলায় সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ কিংবা মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা আসেনি। জেলা প্রশাসক আরও জানান, বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে করোনা বিষয়ে আমাদের ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেহেতু খুলনা বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় স্থল ও নৌ-বন্দর রয়েছে তাই বন্দর সংশ্লিষ্ট জেলাতে একটু বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশনাও জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে।