প্রধান মেনু

করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝেও খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ -কৃষিমন্ত্রী  

ঢাকা, ৩০ আশ্বিন (১৫ অক্টোবর) : কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এসব উদ্যোগের ফলে সকল আশঙ্কাকে পিছনে ফেলে করোনা মহামারির চরম বিরূপ পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড়,বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝেও বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রেখেছে। এ অর্থবছরে চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩ কোটি ৮৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।

মন্ত্রী বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এসময় কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী জানান, করোনাকালে ও করোনা পরবর্তী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয়  নিরলসভাবে কাজ করছে। আউশ এবং আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে আউশের  আবাদ হয়েছে ১৩ দশমিক ২৯৬ লক্ষ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৪ দশমিক ৫১৭ লক্ষ মে:টন। ফলে আউশের আবাদ গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর ও উৎপাদন ৪ লক্ষ মে:টন বৃদ্ধি পেয়েছে।এছাড়া,  এ বছর আমন ধান (রোপা ও বোনা আমন) আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯ লাখ হেক্টর। কয়েক দফা বন্যায় রোপা আমন বীজতলা, চারা ও মাঠে দন্ডায়মান ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতি পোষাতে বিনামূল্যে চারা বিতরণ, ভর্তুকি সহায়তা ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে রোপা আমন ধানের আবাদে সহায়তা দেয়া হয়েছে। আগামী বোরো মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বোরো ধান বীজ কেজি প্রতি ১০/- টাকা হারে ভর্তুকি প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রতি ইঞ্চি জায়গা চাষের আওতায় এনে পারিবারিক পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ৩৭ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দেশের ৪ হাজার ৩৯৭টি ইউনিয়নে ৩২টি করে মোট ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৩৮৭টি পরিবারে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া, মুজিব শতবর্ষ পালন উপলক্ষ্যে প্রতি ইউনিয়নে নতুনভাবে ১০০ টি করে পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হচ্ছে।কয়েক দফার বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ পুর্নবাসন কর্মসূচি হিসেবে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

আরও প্রায় ৭৫ কোটি টাকা দিয়ে  ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে কৃষককে গম, সরিষা, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারী, পিঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ কাজ চলছে।উল্লেখ্য, আগামীকাল ১৬ অক্টোবর কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২০’। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন, শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ’।