ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রসমূহে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে টেকসই উন্নয়ন নীতি ও কৌশল গ্রহণের আহ্বান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর

কায়রো (মিশর), ৮ জুন: অর্গানাইজেশন অভ্ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রসমূহে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য টেকসই উন্নয়ন নীতি ও কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও ডিজিটাল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাহিদা অনুযায়ী সেবার উদ্ভাবন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন এবং আর্থিক সুবিধাদি প্রদানে সরকার, জাতিসংঘ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। নারীর অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নে পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং স্মার্ট প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে নারীরা অধিক হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ মিশরের কায়রোতে ওআইসি’র উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের মিনিস্ট্রিয়াল সেশনে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এ সেশনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আর্থিক ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রকল্প’। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ওআইসি’র সদস্যরাষ্ট্রভুক্ত দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০২০ সালে উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডাব্লিউডিও) গঠিত হয়। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯টি। বাংলাদেশ ২০২১ সাল থেকে এ সংগঠনের সদস্য।
ডাব্লিউডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. মায়া মুরসি এর সভাপতিত্বে ডাব্লিউডিও’র সদস্য রাষ্ট্রের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী, ওআইসি ও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ কাউন্সিল সভায় বক্তব্য রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে নারীদের সমান অধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর্থিক ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে জেন্ডার সমতা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সম্পর্কিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ, প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন এবং এজেন্ট অভ্ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপকল্প ঘোষণা করেছেন । তিনি তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ২০৩০ সালে ত্রিশ শতাংশ ও ২০৪১ সালে পঞ্চাশ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন। এ সময় দেশের তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রায় আট হাজার ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং প্রান্তিক নারীদের ডিজিটাল ও আর্থিক সেবার জন্য নারী নেতৃত্বাধীন এজেন্ট নেটওয়ার্ক ‘সাথী’ প্রবর্তনসহ অন্যান্য বেশকিছু তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
কায়রোর দি নীল রিটজ কার্ল্টন হোটেলে ৬ থেকে ৮ জুন মিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিল সেশনে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহারাইন, কুয়েত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, মিশর, ক্যামেরুনসহ ১৯টি দেশের মন্ত্রী, সিনিয়র অফিসিয়াল ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছে।