ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ২০২১ উদ্যাপন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রস্তাব উত্থাপন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রদানের সময়ের সাথে মিল রেখে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে সম্প্রচার করা হবে

ঢাকা, ২৭ কার্তিক (১২ নভেম্বর): ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদানের সময়ের (বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে) সাথে মিল রেখে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ একই সময়ে দেশব্যাপী সকল সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে সম্প্রচার করা হবে। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় অনুষ্ঠান যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সশরীরে/অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রাথমিকভাবে ৭ মার্চের ভাষণ সাবটাইটেল আকারে জাতিসংঘের ৬টি অফিসিয়াল ভাষায় এবং পরবর্তীতে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহের সহায়তায় সর্বাধিক সংখ্যক ভাষায় অনুবাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দিবসটি জাতীয় ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উক্ত দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারী করবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এর সভাপতিত্বে আজ সকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ দিবসকে প্রথমবারের মত জাতীয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব প্রস্তাব করা হয়।
সভায় আরো যেসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাঁর মধ্যে রয়েছে- বৈদেশিক মিশনসমূহে যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদ্যাপন, জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব কর্মসূচি প্রণয়নপূর্বক দিবসটি উদ্যাপন, সকল জেলা ও উপজেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন, জেলা উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানসমূহে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পৃক্তকরণ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দপ্তর-সংস্থার নিজস্ব কর্মসূচি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ যথাযথভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব সেল গঠন, দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী প্রদান, ক্রোড়পত্র তৈরি, সকল সরকারি-বেসরকারি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রভৃতি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ইউনেস্কো (UNESCO) ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ তথা ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ ভাষণের তাৎপর্য অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ প্রদত্ত ভাষণের দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ দিবস হিসাবে ঘোষণা এবং দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা করে পরিপত্র জারী করে। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় দিবসটি উদ্যাপনের উদ্যোক্তা মন্ত্রণালয় হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে। তবে দিবসটি উদ্যাপনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত করা হবে। দিবসটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আগামী প্রজন্মের মধ্যে যথাযথভাবে সঞ্চারণের লক্ষ্যে উক্ত কর্মকাণ্ডে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সংযুক্ত করা হবে।