প্রধান মেনু

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ

ঢাকা, ৩০ মাঘ (১৩ ফেব্রুয়ারি):  ২০২১ সালের এইচএসসি, আলিম, এইচএসি ভোকেশনাল, এইচএসসি ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৮ জন। এর মধ্যে অংশ নিয়েছেন ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা। এরপর প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে ফলাফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের সার্বিক বিষয় গণমাধ্যমে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। ফলাফল হস্তান্তর ও ফল প্রকাশ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক।

ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৫৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৯ জন। মোট পাসের হার ৯৬ দশমিক ২০ শতাংশ। রাজশাহী বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৯১৮ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৯ জন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। কুমিল্লায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ জন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যশোর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ২৫১ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮৯ হাজার ৬২ জন। পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বরিশাল বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬৮ হাজার ৬২২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯৬৪ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সিলেট বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬৭ হাজার ৯৯৮ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। দিনাজপুর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৪ জন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৩ ভাগ। ময়মনসিংহ বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭০ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৬ হাজার ২৫০ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ জন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৬৮ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ক্রমশ উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বপ্নের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ এবং গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। পরীক্ষার্থীদের বলবো—যদি মূল্যবোধ তৈরি না হয় তা হলে শুধু বেশি নম্বর পেয়ে কী হবে। মানবিক গুণে গুণান্বিত হও, চারপাশে তাকাও, মানুষকে ভালোবাসো। নীতি নৈতিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠো, স্বদেশপ্রেমে উজ্জীবিত হও, নিঃস্বার্থ চিত্তে মানবকল্যাণে নিবেদিত হও।

অভিভাবকদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনার সন্তানকে অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবেন না, স্বার্থপর হিসেবে গড়ে তুলবেন না। দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার শিক্ষা যদি আপনার সন্তান না পায়, মনে রাখবেন এ শিক্ষা অর্থবহ হবে না, শিক্ষার আসল উদ্যেশ্যই বৃথা যাবে।

শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা শিক্ষকতা পেশায় আছেন আপনাদের দায়িত্ব অনেক অনেক বেশি। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে বিষয়ভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষাদানে আপনাদের ভূমিকাই প্রধান। মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক তৈরির ক্ষেত্রেও আপনারাই রাখতে পারেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় কৃতকার্য সকল পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দকে অভিনন্দন। যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আমি আশা করবো তারা নব উদ্যমে পূর্ণ প্রস্তুতিতে আগামীতে পরীক্ষা দিয়ে সফলকাম হবে।

সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ফল প্রকাশে আন্তরিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী।