উপজেলা কৃষি অফিসারের নাকের ডগায় কৃষিজমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ প্রতি বছরের মত এবারও নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার যেন উৎসব শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন থেকে কেটে নিচ্ছে ৪২টি ইটভাটা। উপজেলা কৃষি অফিসারের নাকের ডগায় স্ক্যালেটর মেশিন দিয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট গভীর করে মাটি কাট হলেও তারা যেন কিছুই জানেন না। তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে সচেতন মহল কৃষি জমির উর্বর মাটি কাটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে খবর দিলেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। বরং কৃষি অফিসার বলছেন, ইটভাটা মালিকরা তো কৃষকদের জিম্মি করে মাটি কাটছেনা। কৃষকরা স্বইচ্ছায় মাটি দিলে আমাদের করার কিছুই নেই।
এমন পরিস্থিতিতে যেসব জমি থেকে গভীর করে মাটি কাটা হচ্ছে তার পাশের জমির মালিকেরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে। কারণ এতটা গভীর করায় যে কোন সময় তাদের জমি ধ্বসে পড়ে যাওয়ার সমুহ আশংকা রয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। ইতোপূর্বে এমন ঘটনা ঘটায় অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। কিন্তু কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পায়নি। ফলে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে জমির মাটি বিক্রি করছে। এতে করে উপজেলায় কৃষি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। মাটি কাটা জমিগুলোতে আবাদ করলেও পূর্র্বের মত ফলন পাওয়া যাচ্ছেনা।
একারণে সব ধরণের কৃষি পন্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে উর্বর কৃষি জমি প্রচুর কমে যাবে। যা কোনভাবেই কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশের জন্য খুবই হতাশার ব্যাপার। একারণে সচেতন মহল এভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসনিকভাবে হস্তক্ষেপ দাবি করেছে কৃষকরা জানান, কৃষি জমির মাটি কাটা যাবেনা এব্যাপারে আমাদের কোন দিন কৃষি বিভাগের লোকজন কোন কিছুই বলেনি। তাই এ নিয়ে আমাদের কিছুই জানা নেই। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনা বেগমকে মুঠোফোনে কৃষি জমির মাটি কাটা সংক্রান্ত খবর দেওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা উল্টো প্রশ্ন করছেন যে, ইটভাটাগুলোতে আর কৃষকের মাটি জোড় করে কাটছেনা? তারা যখন স্বইচ্ছায় তাদের জমির মাটি বিক্রি করছে সেখানে আমাদের করার কিছুই নেই।
আমরাও উদ্বিগ্ন, তবে বিভিন্ন সময় কৃষকদের সচেতন করার চেস্টা করা হচ্ছে। এর বাইরে আমাদের কোন দায়িত্ব নেই। জেলা কৃষি কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সরকারের তো এধরণের কোন স্পষ্ট আইন নেই যে, কৃষক তার জমির মাটি বিক্রি করলে আমরা কি করতে পারি। আপনারা জানালেও আমরা কিছুই করতে পারছিনা। আজকালকে কি পানিষ্টমেন্ট ছাড়া দেশে কোন কাজ হয় ? হয়না, তাই আমরা আইন না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।