ইউএন এসকাপ-এর ৮০তম সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের জন্য স্মার্ট উদ্ভাবন শীর্ষক সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে বাংলাদেশ

ঢাকা, ৯ বৈশাখ, (২২ এপ্রিল) : ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (ইএসসিএপি) এর ৮০তম সম্মেলনে বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য স্মার্ট উদ্ভাবন: বাংলাদেশ ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ সাইড ইভেন্ট। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং ব্যাংকক বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সাইড ইভেন্টটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বাংলাদেশের অদম্য যাত্রা এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
আজ থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বাংলাদেশ এবং বৃহত্তর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের অর্জনকে (এসডিজি) এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনী সম্ভাবনার দিকে দৃষ্টিপাত করার জন্য উপস্থিত অংশীজনদের আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী দক্ষিণের দেশগুলোতে সরকারি সেবা ডেলিভারির ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলো দিয়ে সহায়তা করছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই জ্ঞান ও প্রযুক্তির আদান-প্রদান আমাদের সকলকে একসাথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমরা যখন জাতিসংঘ টেকসট উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো পূরণের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, এরকম প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক আইসিটি ইনোভেশন-আইকিউব ম্যাচিং ফান্ড চালু করেছে, যাতে বৈশ্বিক দেশগুলোর ডিজিটাল রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা যায়।’
এ সময় প্যানেলে উপস্থিত বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা খুব অল্প সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সাফল্যের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, যার লক্ষ্য স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এ চারটি প্রধান পিলারের ওপর ভিত্তি করে ২০৪১ সাল নাগাদ অন্তর্ভুক্তিমূলক, উদ্ভাবনী, টেকসই, জ্ঞান-ভিত্তিক স্মার্ট জাতিতে রূপান্তর করা।
ফেডারেল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অভ্ নেপালের ন্যাশনাল প্লানিং কমিশনের সদস্য ড. রমেশ চন্দ্র পাউডেল বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশের প্রযুক্তির অগ্রগতি উন্নত দেশের অর্থনীতি দ্বারা পরিচালিত উন্নত প্রযুক্তির তুলনায় প্রযুক্তিকে আরো সহজলভ্য করে তুলতে পারে। সেই অর্থে এটি সেই অঞ্চলের জন্য গেম চেঞ্জার কৌশল হতে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় উদ্ভাবন ও ডিজিটাল রূপান্তর সংস্থা এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো: মামুনুর রশীদ ভূঞা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোঃ শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উক্ত অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং কী-নোট বক্তব্য উপস্থাপন করেন এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিশিষ্ট বক্তাদের সমন্বিত একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়- যাতে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদানের পাশাপাশি এসডিজি অর্জনের সাথে সম্পর্কিত মূল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় ডিজিটাল উদ্ভাবনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।