প্রধান মেনু

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২৩ ফাল্গুন (৭ মার্চ) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে আমি বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর নারীসহ ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনদের—যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। আরও স্মরণ করছি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতগণকে, যাঁদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার বিনিময়ে নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হয়েছে।

এ বছর নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারীর অধিকার’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নারীদের সম্পৃক্ত করেছিলেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সকল কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ১১ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীকে সহযাত্রী করেছি।

নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১”, নারী উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩- ২০২৫, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন-২০১৪, যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৮, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ ও ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা-২০১৮’। নারী শিক্ষা প্রসার, নারীর দারিদ্র্য বিমোচন, বাল্যবিবাহ নিরোধ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে নারীর অংশগ্রহণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে।

মাতৃত্বকালীন ছুটি স্ববেতনে ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করেছি। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা-তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু রয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা উপজেলায় ৬০টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল ও ন্যাশনাল হেল্প লাইন (১০৯) চালু করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।

বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে রোল মডেল। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, প্লানেট ৫০- ৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অভ্‌ চেঞ্জ, শিক্ষায় লিঙ্গসমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর “শান্তি বৃক্ষ” এবং গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছি। নারীর মেধা মনন ও স্বকীয়তাকে সর্বক্ষেত্রে সমসুযোগ ও সমঅংশগ্রহণের মাধ্যমে সুব্যবহার করে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ। আমি ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২০’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”