প্রধান মেনু

আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির বাণী 

ঢাকা, ১২ আশ্বিন (২৭ সেপ্টেম্বর) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এবারও বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদ্‌যাপিত হচ্ছে  জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য – ‘তথ্য আমার অধিকার, জানা আছে কি সবার’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্য, শোষণ-বঞ্চনা ও দুর্নীতিমুক্ত  সোনার বাংলা গড়ার। জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার নবম জাতীয় সংসদে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস করে এবং এটি বাস্তবায়নে তথ্য কমিশন গঠন করে। কর্তৃপক্ষের নিকট  থেকে জনগণ এ  আইনের ফলে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষমতার অধিকারী হন। এই আইন জনগণের ক্ষমতায়নের পথকে অবারিত করেছে।

তথ্যের অবাধ প্রবাহকে বিস্তৃত করতে আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চালুর অনুমোদন প্রদান করি। এ পর্যন্ত ৪৫টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, ২৮টি এফএম  বেতার  কেন্দ্র এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও সম্প্রচারের অনুমতি  দেওয়া হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে তথ্য প্রকাশ ও প্রচার ব্যবস্থা সুলভ এবং সহজতর হয়েছে। সংসদ টেলিভিশন চালুর মাধ্যমে সংসদ অধিবেশনের তথ্যাদি গণমানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছানো হচ্ছে।

নাগরিক সুবিধা প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন চালু করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ  দেশে পরিণত হবে-এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের  সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশসহ বিশ্ব এখন বহুমাত্রিক সংকটে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সবাইকে যথাযথ দায়িত্বপালনে এগিয়ে আসতে হবে।

আমি ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২১’ এর সার্বিক সফলতা প্রত্যাশা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুবাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

ঢাকা, ১২ আশ্বিন (২৭ সেপ্টেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :  “তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘তথ্য আমার অধিকার, জানা আছে কি সবার’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস, ২০২১’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য প্রাপ্তি ও জানা প্রতিটি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। তথ্যের অবাধ প্রবাহ যেমন নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক,  তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়নকেও সুদৃঢ় করে। জনগণের এ অধিকারকে প্রাধান্য দিয়েই সরকার ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন এবং আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করে।

স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এ আইন আবশ্যিকভাবে তথ্য প্রাপ্তিতে জনগণকে দিয়েছে আইনি ভিত্তি। তথ্য অধিকার আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে তথ্য কমিশন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তথ্য কমিশনের পাশাপাশি দেশের সরকারি-রেসরকারি সংস্থা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, নাগরিক সমাজ, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে তথ্য অধিকার আইন পরিপূর্ণতা পেতে পারে।

বৈশ্বিক করোনা মহামারির প্রভাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। এই ক্রান্তিকালে তথ্যের অবাধ, সঠিক ও সময়োচিত প্রকাশ একদিকে যেমন জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের সুশাসন নিশ্চিত হবে। এছাড়া জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থার সম্পর্কও সমুন্নত থাকবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু  শেখ  মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ  সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন  দেখেছিলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের এই শুভক্ষণে বঙ্গবন্ধুর  সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি সকলকে ধৈর্য, সাহস ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

আমি ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস, ২০২১’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল সর্মসূচির সফলতা কামনা করছি।জয় বাংলা। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”