প্রধান মেনু

আন্তর্জাতিক ওজোন দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির বাণী

প্রধানমন্ত্রীর বাণী :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বাংলাদেশে প্রতি বছরের মতো এবছরও ‘আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দিবসটিতে এবারের প্রতিপাদ্য 32 Years and Healing অর্থাৎ ‘মন্ট্রিল প্রটোকল : ওজোনস্তর সুরক্ষার ৩২ বছর’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে। বিগত তিন দশকের প্রচেষ্টায় ওজোনস্তর পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে শুরু করেছে। ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশসমূহ ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বন্ধ করার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এ ছাড়া, এ প্রটোকলের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশও এ প্রটোকল বাস্তবায়নের অভাবনীয় সাফল্যের গর্বিত অংশীদার। আমাদের সরকারই ১৯৯৭ সালে বায়ু দূষণ ও ওজোনস্তর ক্ষতিকারক গ্যাসের উৎপাদন ও ব্যবহার রোধে বায়ুর মানমাত্রা (Air Quality Standard) নির্ধারণ করে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। তাছাড়া, পরিবেশ আদালত আইন ২০১০, বিপদজনক জাহাজ ভাঙার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১ এবং ২০১৪ সালে একটি সংশোধিত ও পরিমার্জিত ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ ও ওজোনস্তর সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে গৃহীত মন্ট্রিল প্রটোকলের আওতায় ২৯তম কার্যনির্বাহী বোর্ডে Certificate of Appreciation অর্জন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশ উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন ২০১৯, ওজোনস্তর ক্ষয়কারী গ্রিন হাউজ গ্যাসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ/পরিহার করতে জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ প্রণয়ন করেছে এবং বিশুদ্ধ বায়ু আইনের খসড়া প্রস্তুত করেছে। ২০০৯-২০১৬ পর্যন্ত কার্বন জরিপ (২৫৬ মেগাটন) সম্পন্ন হয়েছে। গত তিন বছরে ১০,৬০৬ হেক্টর ব্লক, ৮,৯৯১ হেক্টর ম্যানগ্রোভ ৪,৯৩৭ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান সৃজন করা হয়েছে।

ওজোনস্তর রক্ষায় আমাদের সরকারের গৃহীত কার্যক্রম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি গ্রহণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে দেশে উৎপাদিত পণ্য পরিবেশবান্ধব ও মানসম্মত হচ্ছে। ওজোনস্তর ক্ষয় ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার ক্ষেত্রে বিশ্ব ওজোন দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিবেশবান্ধব বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় মন্ট্রিল প্রটোকল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে। আমি আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস ২০১৯ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ,বাংলাদেশ চিরজীবী,হোক”

রাষ্ট্রপতির বাণী : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় এবছরও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব ওজোন দিবস’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দিতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ওজনস্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রাণিজগতের অস্তিত্ব রক্ষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ এই ওজনস্তর ধ্বংসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিল্পে বিশেষ করে শীতলীকরণ শিল্পে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লুরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাস বড় ভূমিকা রাখে।

এ প্রেক্ষাপটে ১৯৮৭ সালে ওজোনস্তর রক্ষায় গৃহীত জাতিসংঘের মন্ট্রিল প্রটোকল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিগত ৩২ বছরে ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। আগামী ২০৬০ সালের মধ্যে ওজোনস্তর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাই জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি কর্তৃক নির্ধারিত এবারের বিশ্ব ওজোন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘32 Years and Healing’ বা ‘মন্ট্রিল প্রটোকল: ওজোনস্তর সুরক্ষার ৩২ বছর’ সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি। বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন ও নগরায়নের প্রভাবে দিন দিন পরিবেশ দূষণ বেড়ে চলেছে।

বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে। ওজোনস্তর রক্ষার পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণায়নজনিত জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও মন্ট্রিল প্রটোকল উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। মন্ট্রিল প্রটোকল সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবেশদূষণ ও ওজোনস্তর ক্ষয়রোধের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আমি ‘বিশ্ব ওজোন দিবস ২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ, চিরজীবী হোক।”